আমাদের দেশ মূলত সংস্কৃতিমূলক একটি দেশ। এখানে সকল মানুষ জাতি ধর্ম নির্বিশেষে প্রত্যেকটি উৎসব পালন করেন। আর এই এত উৎসবের মধ্যেই একটি খুব জনপ্রিয় এবং পবিত্র উৎসব হলো ‘ রাখী বন্ধন ‘। আমাদের দেশে রাখী বন্ধন খুব নিষ্ঠা ভরে পালন করা হয়। এত সম্পর্কের মধ্যে খুব আত্মিক একটি সম্পর্ক হলো ভাই- বোনের সম্পর্ক।
আর এই দিনটি তাদের দিন। এই দিন দাদা বা ভাই এর দীর্ঘ আয়ু ও সুস্থতা কামনা করে তাদের হাতের কব্জিতে রাখী বেঁধে দেয় বোনেরা। কিন্তু এই রাখী বন্ধনের অনেক নিয়ম রীতি আছে সেগুলো জেনে নেওয়া যাক –
রাখী বাঁধার কিছু প্রচলিত নিয়ম আছে। যেমন – রাখী বাঁধার সময় দাদার মাথায় রুমাল বেঁধে ঢেকে দেওয়া হয়। কপালে একটি তিলক কেটে তাতে চাল লাগিয়ে দাদা বা ভাইয়ের ডান হাতে বেঁধে দেওয়া হয় রাখী।
তবে রাখী বাঁধার সময় কটি গিঁট দেওয়া উচিত তা অনেকেই জানে না। যে যেমন পারে গিঁট দিয়ে দেয়। কিন্তু শাস্ত্র মতে এরও একটি নিয়ম আছে। বলা হয় শাস্ত্র মতে তিনটি গিঁট দেওয়া উচিত। এই তিন টি গিঁট তিনটি অর্থ বহন করে। কি কি তা জেনে নেওয়া যাক।
১. প্রথম গিঁট টি দেওয়া হয় ভাইয়ের দীর্ঘ আয়ু কামনায়।
২. দ্বিতীয় গিঁট টি দেওয়া হয় বোনের দীর্ঘায়ু কামনায়।
৩. তৃতীয় গিঁট টি দেওয়া হয় ভাই ও বোনের সম্পর্ক যাতে চিরস্থায়ী হয় সেই কামনায়।
রাখীর দিন সকালেও কিছু নিয়ম আছে যেমন –
১.সকাল বেলা স্নান সেরে শুদ্ধ হয়ে ঈশ্বর কে প্রণাম করে তারপর রাখীর কাজে হাত দেওয়া উচিত।
২. একটি পিতল বা তামার থালায় রাখী, সিঁদুর, গঙ্গা জল, ধান, দূর্বা রাখতে হবে।
৩. প্রথমে ঈশ্বর কে প্রণাম করে তারপর রাখী পড়াতে হবে।
৪. ভাইকে পূর্বদিকে মুখ করে বসাতে হবে। এদিকে বসালে দেবতারা আশীর্বাদ করেন।
৫. মাথায় রুমাল বেঁধে কপালে তিলক পরিয়ে তাতে ধান বা চাল দিতে হবে।
৬. নজর দোষ কাটাতে প্রদীপ এর তাপ দেওয়া ভালো। সেটা দিতে হবে।
৭. তারপর ইষ্ট দেবতাকে স্মরণ করে পবিত্র রাখী তাদের হাতে বেঁধে দেওয়া উচিত।
এবং শেষে একে উপরকে মিষ্টি খাইয়ে অনুষ্ঠান শেষ করতে হয়।