আত্মীয়র বাড়িতে মানুষ কি খেতে পারে, মুরগির মাংস অথবা পাঁঠার মাংস, এর বেশি তো নিশ্চয়ই কিছু হতে পারেনা। কিন্তু মানুষের আত্মীয়র বাড়িতে গিয়ে মাথার ঘিলু খাবার কথা কোনদিন শুনেছেন কি। না শুনে থাকলে আজ শুনে নিন। এইরকম একটি ভয়ঙ্কর প্রথা পালন করত পঞ্চাশ ষাট দশকের পাপুয়া নিউগিনির দক্ষিন ফোর এলাকার মানুষেরা। এখানকার বাসিন্দারা এককথায় ছিলেন নরখাদক। এদের পরিবারের কেউ অথবা আত্মীয় যদি কি মারা যেত তাহলে কিছু খেয়ে নিত এরা। এমনকি গোষ্ঠী বিবাদে এক গোষ্ঠী যখন অন্য গোষ্ঠীকে হারিয়ে দিত, তখনো পরাজিত গোষ্ঠীর মৃতদেহের মগজ খেয়ে নিত এরা।
এই মগজ এর ভিতরে থাকতো এক মরণ রোগের প্রতিষেধক, এমনটাই মনে করত তারা। তবে এই ভয়ঙ্কর প্রথা পালন করতে গিয়ে তাদের মধ্যে ছড়িয়ে গিয়েছিল এক অজানা রোগ। তবে ষাটের দশকে ব্যাপারটা অনেকটাই বন্ধ হয়ে যায়। যেগুলোকে তারা মারণ রোগের প্রতিরোধক বলে মনে করত, সেই ঘিলু কিনা তৈরি করে দিল ভয়ঙ্কর এক মারণ রোগ।
আসলে সেই সময় হঠাৎ করে পাপুয়া নিউগিনির মতো ছোট্ট একটি দ্বীপ রাষ্ট্র ছড়িয়ে পড়েছিল অজানা একটি রোগ। এই রোগের জন্য হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল কথা বলা। এমনকি তারা চলাফেরাও করতে পারত না। শেষ পরিণতি ছিল মৃত্যু। স্থানীয় ভাষায় এই রোগের নাম ছিল কুরু। এক সময় এটি মহামারীর আকার ধারণ করে। নিউগিনি সরকার সেই সময়ে মানুষের অবস্থা দেখে আঁতকে উঠেছিল। শেষ পর্যন্ত মগজ খাবারেই নিশংস নীতি আইন করে বন্ধ করে দেওয়া হয়। পৃথিবী থেকে মুছে যায় আস্তে আস্তে ভয়ঙ্কর এক রীতি। তার সঙ্গে মুছে যায় এই রোগ
তবে এই রোগের উৎপত্তি কোথায় হয়েছিল তা এখনো জানা যায়নি। সম্ভবত মানুষের মস্তিষ্কের মধ্যে থাকা দূষিত অংশগুলি থেকে এই রোগের উৎপত্তি হয়েছিল। যে রোগ মুহূর্তে একটি মানুষকে অন্ধ করে তার জীবন শেষ করে দিতে পারতো।