Home অফবিট ভূতচতুর্দশীর সঙ্গে জ’ড়ি’য়ে আছে পঞ্চভূতের যো’গ, আজ এই ১৪ শাক খা’চ্ছে’ন তো?

সব খবর সরাসরি পড়তে আমাদের WhatsApp  Telegram  Facebook Group যুক্ত হতে ক্লিক করুন

ভূতচতুর্দশীর সঙ্গে জ’ড়ি’য়ে আছে পঞ্চভূতের যো’গ, আজ এই ১৪ শাক খা’চ্ছে’ন তো?

আমরা সকলেই জানি কালীপুজোর ঠিক আগের দিন পালন করা হয় ভূত চতুর্দশী। এদিনের সঙ্গে পঞ্চতত্ত্ব অথবা পঞ্চভূতের যোগাযোগ রয়েছে। হিন্দু শাস্ত্র মতে এই পঞ্চতত্ত্ব নিয়েই আমাদের মানব দেহ গঠিত, যা মৃত্যুর পর পঞ্চভূতে বিলীন হয়ে যায়। এই ভূত চতুর্দশী তে আমরা সকলেই খেয়ে থাকি চোদ্দ শাক। কিন্তু কেন এই শাক খাওয়া হয়। আসলে শারীরিক ক্ষয় রোধ করার জন্য বিশেষ ঔষধি গুণ যুক্ত এই ১৪ টি শাক খাবার নিয়ম শাস্ত্রে বলা আছে। এই শাকের মধ্যে রয়েছে পলতা, বেতো, কালকাসুন্দি,সরষে, গুলঞ্চ, জয়ন্তী, ওল, নিম, ঘেটু, হিঞ্চে, শালিঞ্চা।

শীতের প্রাক্কালে মানুষের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারে তার জন্য এই চৌদ্দ শাক খাওয়ার রীতি প্রাচীনকাল থেকে চলে আসছে। এই শাক খেয়ে সন্ধ্যেবেলা চৌদ্দটি প্রদীপ জ্বালিয়ে খারাপ আত্মা এবং অন্ধকারকে দূর করা হয়। এর পেছনে একটি বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাও আছে। হেমন্ত শুরুতে প্রদীপ জ্বালানো হয় পোকার উপদ্রব দূর করার জন্য। আবার ঋতু পরিবর্তনের কারণে যে অসুখ বিসুখ এর প্রকোপ বেড়ে যায় তা দূর করার জন্য শাক খাওয়ার প্রয়োজনীয়তা আছে বৈকি।

এবার চলুন জেনে নেওয়া যাক কোন শাক কি কি রোগ প্রতিরোধ করতে পারে।

সরষে শাক: সরষে তেলের মত সরষে শাক প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সমৃদ্ধ হয়। নিয়মিত এই শাক যদি খেতে পারেন তাহলে রক্ত উপকারী কোলেস্টরলের পরিমাণ বেড়ে যায়। তাছাড়া এই শাক দেহে ভিটামিন ডি তৈরি করতে সাহায্য করে।

পালং শাক: কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করে এই শাক। তাই নিয়মিত এই শাক খেলে রক্তে আয়রন এর মাত্রা বৃদ্ধি পায়।

কলমি শাক: হজমের সমস্যা বেশি থাকলে এই শাক না খাওয়া ভালো। তবে পেট পরিষ্কার রাখতে গেলে এই শাক খাওয়া প্রয়োজনীয়। এটি জলের পরিমাণ শরীরে বজায় রাখে এবং শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

পুঁইশাক: প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে এই শাকের মধ্যে। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, খনিজ লোহা,ম্যাগনেসিয়াম। হার্টের সমস্যা থাকলে এই শাক কিন্তু খাবেন না।

লাল শাক: রক্তে হিমোগ্লোবিনের সংখ্যা বাড়িয়ে দেয়। এতে রয়েছে অ্যামিনো এসিড, ফসফরাস, আয়রন, ভিটামিন ই, ম্যাগনেসিয়াম যা ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে।

গিমা শাক: লিভারের অসুখ, জন্ডিস এবং সর্দি-কাশিতে খুব উপকার লাগে এই শাক। তেতো হলেও খেলে মুখের অরুচি সারে। বেগুন দিয়ে চচ্চড়ি অথবা ডাল বাটা দিয়ে ভাজা খেতে ভালো লাগে।

পাট পাতা: কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভুগলে এই শাক খুব উপকারী। এছাড়াও সিজন চেঞ্জ হলে খুব উপকারী এই পাতা।

মুলো শাক: এই শাক সহজে হজম হয়, খেলে বাতের ব্যথা সেরে যায়। কিন্তু ভালো করে সেদনা করে খেলে কফ অথবা পিত্তের সমস্যা বাড়তে পারে।

বেতো শাক: এই শাকের রায়তা খেতে অবাঙ্গালীরা খুব ভালোবাসেন। মুখের রুচি ফেরানো থেকে শুরু করে হজমশক্তি বাড়ায় এই শাক।

হিংচে শাক: রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। শরীর ঠান্ডা রাখে রক্ত পরিষ্কার করে। অ্যানিমিয়া হলে এই শাক খুব উপকারী।

সজনে পাতা: এর উপকারিতা প্রচুর। এই পাতা খেলে হার্ট, আথ্রাইটিস, ডায়াবেটিস এবং ক্যান্সারের ব্যাপক শুশ্রূষা হয়। পালং শাকের থেকে তিনগুণ বেশি আয়রন থাকে এই শাকে। রক্তশূন্যতা পুরোপুরি আটকে দেওয়া সম্ভব এই শাক খেলে।

পটল পত্র: আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে এই পাতা বিভিন্ন ভাবে ব্যবহার করা হয়। এই পাতা রক্তবর্ধক এবং রক্তচোষক হিসেবে কাজ করে।

শুষনি শাক: যারা নিদ্রাহীনতায় ভোগেন, তাদের ক্ষেত্রে এই শাক খুব উপকারী। এছাড়াও তীব্র মানসিক চাপ, হাঁপানি ,শ্বাসকষ্ট, গায়ে ব্যথা, জিবি এবং মুখের ক্ষত অথবা চর্মরোগ হলে এই শাক খাওয়া উচিত।

জয়ন্তী: এই শাক খেলে বহুমূত্র, কৃমি, শ্বেতী দূর করে দেয়।