সব খবর সরাসরি পড়তে আমাদের WhatsApp  Telegram  Facebook Group যুক্ত হতে ক্লিক করুন

২ বছরের ছেলে বি’র’ল রো’গে আ’ক্রা’ন্ত, বাড়িতেই ল্যাব বা’নি’য়ে ওষুধ আবিষ্কার করলেন বাবা

পিতা-মাতা হলে হয়তো আলাদা একটি শক্তি অর্জন হয়ে যায় সমস্ত বাবা-মায়েদের। সম্প্রতি চীনের এক ব্যক্তি এই কথাটি সত্যি করে দিলেন। শরীরে তামার অভাবে বিরল রোগগ্রস্থ নিজের শিশু সন্তানকে বাঁচাতে বাড়িতেই ল্যাবরেটরি তৈরি করে ফেললেন বাবা। এমনকি আনকোরা হাতে ওষুধ তৈরি করে ফেলেন তিনি। সেই ওষুধ খেয়ে এখন ভালো আছে দুই বছরের ছেলে হাওয়াং।

ছোট্ট শিশুটির এমন একটি অসুখ ছিল, যার ফলে তাকে বাঁচানো যেত না বেশিদিন। চিকিৎসকরা বলে দিয়েছিলেন, মাসখানেকের বেশি বাঁচবেনা শিশুটি, যদি না প্রয়োজনীয় ঔষধের ব্যবস্থা করা যায়। এরপর পিতা জু ওয়েই বিন্দুমাত্র দেরি করেননি। চীনের ওষুধের বাজার তন্ন তন্ন করে খুঁজে ফেলেছেন তিনি। কিন্তু বিরল ওই রোগের ওষুধ পাওয়া যায়নি। স্বাভাবিকভাবেই অসহায় বোধ করতে শুরু করেন জু। এদিকে ছেলে ক্রমশ নেতিয়ে পড়ে। বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা করবেন, সেটাও সম্ভব নয় করোনার কারণে। কারণ আমরা সকলেই জানি এই সময় বিদেশের যাতায়াত কতখানি ঝুঁকিপূর্ণ। আর কোন উপায় না দেখে নিজের ল্যাবরেটরি তৈরি করে নিজের হাতেই সন্তানের ওষুধ তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেন পেশায় অনলাইন ব্যবসায়ী স্কুল পাস ওই বাবা।

১৯৬২ সালে নিউ ইয়র্কের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জন মেনকেস এবং তার সহকর্মীরা পুরুষ শিশুদের একটি বিরল রোগ সম্পর্কে নিবন্ধ প্রকাশ করেছিলেন। এই বিরল রোগটিকে বলা হয় মেনকেস সিনড্রোম। এটি অদ্ভুত চুলের রোগ। শরীরে তামার অভাবে এই রোগ হয়ে থাকে। জিনগত কারণে এই রোগ হয় তাই এই ওষুধ সহজলভ্য নয়। ফলে ছেলের ওষুধ না পেয়ে বাড়িতেই ল্যাবরেটরি তৈরি করে ওষুধ বানানোর সিদ্ধান্ত নেন জু। চীনের কানমিং শহরের একটি অ্যাপার্টমেন্টে থাকেন ঐ ব্যক্তি।সেখানেই ল্যাবরেটরী তৈরি করেন তিনি। মেনকেস সিনড্রোম নিয়ে পড়াশোনা করেন অনলাইনে। শুরুতে ভাষার সমস্যা হচ্ছিল, কারণ মেডিসিনের অধিকাংশ ইংরেজিতে লেখা। এদিকে চীনা ভাষা ছাড়া অন্য কোন ভাষা জানত না জু। শেষ পর্যন্ত অনুবাদ করে সমস্ত ওষুধের পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করেন তিনি।

জু বলেন, আমি কোনোদিন ভাবতে পারিনি আমি এই ওষুধ তৈরি করব। যদিও ভাবার সময় আমার কাছে ছিল না। আমি শুধু জানতাম এটা আমায় করতেই হবে। সকলেই বলেছিল এটা অসম্ভব। কিন্তু আমি জানতাম আমাকে করতে হবে।তবে ওষুধ তৈরি করে প্রথমে খরগোশের উপর প্রয়োগ করে দেখেন জু। এরপর নিজের সন্তানকে দেন। প্রথমে কম ডোজ দিতেন। পরে আস্তে আস্তে পরিমাণ বাড়িয়েছেন। সম্পূর্ণ সেরে উঠলেও বাবার ওষুধ খেলে এখন অনেকটাই ভালো হয়েছে আদরের হওয়াং।