একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির হয়ে প্রার্থী হিসেবে বাঁকুড়া জেলার শালতোড়া বিধানসভা কেন্দ্র থেকে জিতেছেন চন্দনা বাউরী। বিজেপির সবথেকে নিম্নবিত্ত প্রার্থী বলা যেতে পারে চন্দনাকে। তার স্বামী ৪০০ টাকা মজুরিতে রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। স্বামী, সন্তান এবং এক বৃদ্ধা শাশুড়িকে নিয়ে এতদিন কোনমতে দিন চলতো তার। তবে একুশের নির্বাচন তার জীবনের অনেকখানি পরিবর্তন এনে দিয়েছে। এখন আর তিনি একজন সাধারন গ্রাম্য গৃহবধূ নন, আজ তিনি বিধায়ক।
গ্রামের এই সহজ-সরল গৃহবধূ সমাজের মানুষের উদ্দেশ্যে কাজ করার জন্যেই ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন। জনগণ তাকে নির্বাচিত করেছেন। নির্বাচনে জয়লাভের পর থেকেই তার জন্য চারজন নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করা হয়েছে। ওই চারজনের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করতেও বেশ বেগ পেতে হয়েছে দিন আনা দিন খাওয়া এই পরিবারের। কিন্তু তিনি আজ বিধায়ক, বিধায়ক হিসেবে তার মাস মাইনেও কিছু কম নয়। বিধায়ক হিসেবে তিনি যে মোটা অংকের মাইনে পাবেন, এককথায় তা বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না চন্দনা।
পশ্চিমবঙ্গের একেকজন বিধায়ক মাসে প্রায় ৮২ হাজার টাকা মাইনে পেয়ে থাকেন! সেই হিসেবে জুলাই মাসে চন্দনা যে মাইনে পাবেন তা এক লক্ষ টাকারও বেশি। এত টাকা দিয়ে কী করবেন? ভেবে পারছেন না চন্দনা। এত টাকা তো তার সংসার খরচের জন্য লাগবে না! তাই তিনি বাড়তি টাকাটুকু সাধারণ মানুষের কাজে ব্যবহার করতে চান। মাস মাইনের টাকা নিয়ে আপাতত বেজায় চিন্তিত চন্দনা বাউরী।
তবে চন্দনা কিন্তু এই টাকা দিয়ে চাইলে নিজের পরিবারের জন্য বিলাসবহুল জীবনের সুখ কিনতে পারতেন, কিন্তু তিনি তা করতে চান না। তিনি ওই টাকা গরিব মানুষের সুযোগ-সুবিধা এবং তাদের সাহায্য করার জন্য ব্যায় করতে চান। এর জন্য বহু চিন্তা আসছে তার মাথায়। প্রথম মাসের মাইনে নিয়ে কি করবেন, তা ভেবে না পেয়ে তিনি “এমপি ডাক্তারবাবু” অর্থাৎ সুভাষ সরকারের পরামর্শ নেওয়ার মনস্থ করেছেন।