“আপনি যে মারা গেছেন সেটা আপনি জানেন না, কিন্তু পৌরসভার লোকজন জানে”, শুনতে অবাক লাগলেও এই ঘটনাই ঘটেছে বাস্তবে। ঘটনাটি ঘটেছে মহারাষ্ট্রের থানেতে। বছর ৫৫ এক শিক্ষক চন্দ্রশেখর দেশাই, যিনি সকালবেলা উঠে এই ঘটনার সম্মুখীন হলেন। মিউনিসিপাল কর্পোরেশন থেকে তার কাছে একটি ফোন আসে এবং ফোন করে বলা হয় তার ডেট সার্টিফিকেটটা নিয়ে যাওয়ার জন্য। বছর ৫৫ শিক্ষক চন্দ্রশেখর দেশাই থানের মানডাপার বাসিন্দা।তিনি ঘাটকোপারের একটি স্কুলের শিক্ষক। তিনি বলেন যে, “সকাল বেলায় হঠাৎ এক মহিলা ফোন করেন এবং নিজেকে টিএমসির স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মচারী বলে পরিচয় দেন এবং তারপর মহিলা বলেন আপনার মৃত্যুর প্রমানপত্রটি অফিস থেকে সংগ্রহ করে নিয়ে যাওয়ার জন্য”।
সংবাদমাধ্যমকে চন্দ্রশেখর বাবু জানায় যে, “মহিলা যখন জানতে পারেন যার সাথে ফোনে কথা বলছেন তিনিই চন্দ্রশেখর দেশাই, তখন সম্পুর্ন ব্যাপারটিকে নিয়ে তিনি অবাক হয়ে যান। এরপর ওই মহিলা চন্দ্রশেখর বাবুকে জিজ্ঞাসা করেন যে, উনার পরিবারের কেউ করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন কিনা? এইরকম একটি প্রশ্ন করেই মহিলা তার ফোনটি কেটে দেয়।”
সত্যি নিজের মৃত্যুর খবর নিজেই শুনছে। তার মৃত্যুর সার্টিফিকেট সংগ্রহ করা ব্যাপারটা সত্যিই চন্দ্রশেখর বাবুর কাছে মনে রাখার মতোই ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এরকম একটি ঘটনার পরে সকলের সামনে এসেছে দায়িত্ববোধহীন নিয়ম-নীতির কথাও। সরকারি,নিয়ম অনুসারে এই রকম একটি ভুল কি করে হয় এখন সেটাই হলো প্রশ্ন। চন্দ্রশেখর বাবু জানান যে, “গত বছরে তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন এবং আইসোলেশনে তিনি বাড়িতেই ছিলেন এবং বাড়িতে থেকেই তিনি তার চিকিৎসা করিয়ে ছিলেন এবং পরে তিনি সুস্থ হয়ে যান”।
তিনি আরো বলেন , “যখন তিনি গত বছর করোনায় আক্রান্ত হয়ে আইসোলেশনে ছিলেন, সেই সময় স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে তার কাছে ফোন এসেছিল”। এইরকম একটি ফোন আসার পর চন্দ্রশেখর বাবু পৌরসভায় যান এবং সেখানে গিয়েই জানতে পারেন যে তিনি মারা গেছেন। সেখানের আধিকারিকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন এবং তাড়াতাড়ি সেই মৃত্যু সার্টিফিকেট সংশোধন করার কথা বলেন।
যদি এই সার্টিফিকেট সংশোধন না করা হয় তাহলে আইনত সে মৃত বলে জানবে সকলে এবং নানা রকম সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত থাকবেন। থানের মেয়র জানিয়েছেন, “রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে যে তালিকা জারি করা হয়, সেই তালিকা এসেছিল পুনের আইসিএমআর থেকে। ওই তালিকায় যাদের নাম ছিল তারা থানের বাসিন্দা, কিন্তু তাদের মৃত্যু হয়েছে থানের বাইরে। ভুলের কারণেই এই রকমভাবে তালিকায় ওই শিক্ষকের নাম চলে এসেছে”।
তিনি আরও জানান যে, “টিএমসির পক্ষ থেকে ওই শিক্ষকের ডেট সার্টিফিকেট জারি করা হয়নি। শুধুমাত্র একটা ভেরিফিকেশন কল করা হয়েছিল শিক্ষককে”। চন্দ্রশেখর বাবু জানান যে, “ভগবানের দয়াতে ওই ফোনটা আমার বৃদ্ধা মা অথবা আমার স্ত্রীর কাছে যায়নি, যদি যেত তাহলে তারা ভেঙে পড়তো”।