দীর্ঘ তিন বছর পর ভারতে আসতে চলেছেন বাংলাদেশের প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর এই ভারত সফর বেশ গুরুত্বপূর্ণ হবে বলেই মনে করা হচ্ছে। বাংলাদেশ সূত্র বলছে, নয়াদিল্লি সফর সেরে দেশবাসীর কাছে স্বাভাবিক ভাবেই খালি হাতে ফিরতে চাইবেন না হাসিনা। এ বারের নয়াদিল্লি সফরে ঢাকা এমন কিছু হাতে নিয়ে ফিরতে চায়, যা আওয়ামী লীগ সরকারকে ঘরোয়া রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সুবিধাজনক জায়গায় পৌঁছে দেবে। ভারত-বাংলাদেশ তিস্তা চুক্তির রূপায়ণ নিয়ে এখনোও অবধি ভারতের তরফ থেকে ইতিবাচক কিছু সিদ্ধান্ত পান নি বাংলাদেশ।
তাই এই সফরে যে তিস্তা নদী সম্পর্কিত কোনও অগ্রগতি হবে না তা জানে ঢাকা। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে বল কিছুটা গড়িয়ে দিতে পারলেও আওয়ামী লীগ সরকারের রাজনৈতিক লাভ। আগামী ৫ সেপ্টেম্বরে দিল্লি পৌঁছবেন শেখ হাসিনা। তাঁর আসন্ন সফরের আগে ঢাকা একান্ত ভাবে চাইছে, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লিতে হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করুন। হাসিনা ভারতে আসার পূর্বে মমতাকে চিঠি লিখে জানান যে, তিনি ভারতে আসছেন এবং আসা করছেন এই সফরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে তাঁর দেখা হবে।
শুধু তাই নয় পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশংসা করলে হাসিনা মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদও জানিয়েছিলেন তাঁর চিঠিতে। মমতাকে লেখা চিঠিতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য ছিল, ‘আপনার সৌহার্দ্য এবং অভিনিবেশ আমায় মুগ্ধ করেছে। বাংলাদেশের মানুষ পশ্চিমবঙ্গের মানুষের সঙ্গে একাত্ম বোধ করে।’
আরো পড়ুন: “চোখের আলো”, বিনামূল্যে চশমা ও ছানি অপারেশন, জেনে নিন সু’যো’গ সু’বি’ধা
তবে এখনও অবধি দিল্লির বৈঠকে যাওয়ার নিমন্ত্রণ পান নি এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে তেমনই জানা যাচ্ছে। এমনকি রাজনৈতিক সুত্রেও আমন্ত্রণ পেয়েছেন কিনা কেউ বলতে পারছেন না। তবে রাজনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, সব মিলিয়ে হাসিনার ভারত সফরের সময়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর দিল্লি আসার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
আর তাদের সাক্ষাতে দুই দেশের জন্যই যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে তারও সম্ভবনা রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। ঢাকার এক শীর্ষ সূত্রের বক্তব্য, “দক্ষিণ এশিয়ার পরিবর্তিত ভূকৌশল এবং ভূ-অর্থনীতির সাপেক্ষে ভারত নতুন কিছু পদক্ষেপ করুক যাতে বাংলাদেশ শক্তিশালী হয়। ভারতকে অবশ্যই তাদের নিজেদের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি বজায় রাখা এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক বৃদ্ধিকে স্বীকৃতি দেওয়া— এই দুইয়ের মাঝে সূক্ষ্ম ভারসাম্য তৈরি করতে হবে।”
রোহিঙ্গা ও তিস্তা নদী সম্পর্কিত বিষয় গুলোও যাতে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় তার অনুরোধ করেন বাংলাদেশ থেকে ভারতকে। । পাশাপাশি অনুপ্রবেশকারীদের ফেরত পাঠাতে ভারতকে মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি নেওয়ার অনুরোধও করা হচ্ছে ঢাকা শীর্ষ নেতৃত্বের পক্ষ থেকে। আর এসবের মধ্যেই বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের মন্তব্যে তৈরি হয়েছে বিতর্ক।