দেশে হোক অথবা বিদেশে, নারীদের নিরাপত্তা নিয়ে সবসময় প্রশ্ন উঠেছে বারবার। দক্ষিণ কোরিয়ার কিছু মহিলা সম্প্রতি বীর্য সন্ত্রাসের শিকার হয়েছেন। দক্ষিণ কোরিয়ার বেশ কিছু নেতা এই বিষয়ে করা আইনের দাবি জানিয়েছেন। ঘটনাটি সামনে আসার পর দেশে এবং বিদেশে তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। গত দুই বছর আগে প্রথম বার এই মামলা সামনে নিয়ে আসেন দক্ষিণ কোরিয়ার এক মহিলা। ওই মহিলার জুতোতে বীর্য লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। আদালত ওই ব্যক্তিকে ৪৩৫ ডলার জরিমানা করেছিল। ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে শুধু সম্পত্তি নষ্টের অভিযোগ আনা হয়েছিল কিন্তু এমন কোন অপরাধের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কোনো আইন নেই বলে, শুধুমাত্র জরিমানা নিয়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
অপর একটি মামলায় এক মহিলার কফিতে বীর্য মিশিয়ে দেওয়ার অপরাধে এক যুবককে তিন বছরের সাজা দেওয়া হয়েছিল। তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে, ওই যুবকটি মহিলাকে বিশেষভাবে পছন্দ করতেন কিন্তু মহিলা তাকে পাত্তা দিতেন না বলে, এমন কাজ করেছিলেন ওই যুবক। কিন্তু সেই বারও ওই যুবকের বিরুদ্ধে কোনো যৌন হেনস্থার ধারা লাঘু করা হয়নি। যেহেতু শুধুমাত্র মহিলাকে বিব্রত করার জন্য এই কাজ করেছিল ওই যুবক, মহিলাকে স্পর্শ করা হয়নি তাই সেবারও নির্দিষ্ট কোনো আইন না থাকায় ওই যুবককে সামান্য সাজা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল।
কিন্তু চলতি বছরে আরেকটি চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে। দক্ষিণ কোরিয়ার এক সরকারি অফিসার তার মহিলা সহকর্মীর কফিতে বীর্য মিশিয়ে দেন। শুধু একবার নয় পর পর ৬১ বার এই কাজ করেন তিনি। পুলিশ তার বিরুদ্ধে কেবলমাত্র কফি কাপ নোংরা করার অভিযোগ নিয়ে আসে, এবারও সেই ভাবে শাস্তি হয় না তার। এই সমস্ত অভিযোগের বিরুদ্ধে ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতা জানান, ওই সরকারি কর্মীর বিরুদ্ধে শুধুমাত্র কাপ নষ্ট করার অভিযোগ নিয়ে আসা হয়েছিল। যেহেতু ওই ব্যক্তি কোন মহিলাকে স্পর্শ করেনি তাই ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোনো যৌন হেনস্থার অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। কিন্তু বিষয়টি দ্রুত সংশোধন করা দরকার। আইনে এমন একটি শাস্তির ব্যবস্থা আনা দরকার যাতে এই সমস্ত মানুষ আর এমন অপরাধ না করতে পারে।
দক্ষিণ কোরিয়ার মহিলা কমিশনের মহাসচিব জানিয়েছেন, এটা ছোটখাটো অপরাধ ভাবলে ভুল বলা হবে। শুধুমাত্র স্পর্শ করলে যৌন অপরাধ হয় না এটাও এক প্রকার গুরুতর যৌন অপরাধ। ইচ্ছাকৃতভাবে একটি লিঙ্গকে টার্গেট করে এটি করা হচ্ছে। যৌন অপরাধ ছাড়াও এটি একটি ঘৃণ্য অপরাধের তালিকাতে পড়ে। তাই অবিলম্বে শাস্তির প্রয়োজন আছে।