গত রবিবার ১৫ মে সকালে দক্ষিণ শহরতলির গড়ফার আবাসন থেকে পল্লবীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়। তাঁর গলায় বিছানার চাদর জড়ানো ছিল। দরজা ভেঙে ঢুকে পল্লবীর ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান বলে দাবি করেন পল্লবীর লিভ-ইন সঙ্গী তথা প্রেমিক সাগ্নিক চক্রবর্তী। তারপর পুলিশে খবর দেওয়া হয়।
দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় পুলিশ। আত্মহত্যা নাকি খুন – অভিনেত্রী পল্লবী দে’র মৃত্যুর পর দিনভর তা নিয়ে টানাপোড়েন চললেও ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে আত্মহত্যার ইঙ্গিত মিলেছে। তবে ময়নাতদন্তের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট হাতে না পাওয়া পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতেই রাজি নন পুলিশ আধিকারিকরা।
তবে পল্লবীর পরিবারের ইঙ্গিত, ‘হয়তো খুনই করা হয়েছে ওকে।’ আর বারংবার পরোক্ষ ভাবে আঙুল উঠছে সাগ্নিক চক্রবর্তীর দিকে। সাগ্নিকের সঙ্গে পল্লবী দে-র প্রেমের সম্পর্ক কখন কিভাবে তৈরী হয় তা জানান পল্লবীর খুব কাছের বন্ধু তথা জনপ্রিয় টেলি অভিনেত্রী প্রত্যুষা পাল। লকডাউনের আগেই পল্লবীর সাথে আলাপ প্রত্যুষার। ধারাবাহিকে একসঙ্গে কাজও করেছেন দুজনে।
আরো পড়ুন: সাতটি ঘোড়া একসঙ্গে একই দি’কে দৌড়োচ্ছে, এই ছবি ঘরে বা অফিসে লাগালে কি উপকারিতা মি’ল’বে?
টানা এক বছর প্রত্যুষা এবং পল্লবী একসঙ্গে একই ছাদের তলায় থাকতেন। সেই কারণে প্রত্যুষার সুযোগ হয়েছে পল্লবী এবং সাগ্নিকের প্রেমের শুরুটা দেখার, সেই সাথে তাঁদের আদর, আবদার, ঝগড়া ঝামেলার সাক্ষীও ছিলেন তিনি। আর আজ এই বিভীষিকাময় দিনগুলোতে সেই কথাই বার বার মনে আসছে তাঁর। তাঁদের সম্পর্কের খুঁটিনাটি নিয়েই চোখের জলে আবারও মুখ খুললেন প্রত্যুষা।
একসময় হাওড়ায় একই পাড়ায় থাকতেন সাগ্নিক-পল্লবী। সেই সূত্রে তাঁরা একে অপরকে আগে থেকেই চিনতেন। প্রথম লকডাউনের সময় থেকে তাদের প্রেমের শুরু। আর সেই অতিমারির সময়েই প্রত্যুষা এবং পল্লবী তাঁদের ফ্ল্যাট ছেড়ে নিজের নিজের বাড়ি ফিরে যান। এরপর প্রত্যুষা জানান, লকডাউন উঠে যাওয়ার পর সেই ফ্ল্যাটেই সাগ্নিকের সঙ্গে থাকতে শুরু করেন পল্লবী। আর মাত্র গত মাসেই তাঁরা একসঙ্গে নতুন ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছিলেন।
এরপর একাধিক জন্মদিনের পার্টি বা একাধিক আড্ডার আসর সবক্ষেত্রেই সাগ্নিক ও পল্লবীকে একসঙ্গেই দেখেছেন প্রত্যুষা। এমনকি যখন প্রত্যুষা পল্লবীকে আলাদা দেখা করার কথা বলত তখনও তাঁদের মাঝে এসে উপস্থিত হতেন সাগ্নিক। প্রত্যুষা আরও বলেন, “সারা দিন সাগ্নিককে নিয়ে চিন্তায় থাকত পল্লবী। আদর করে ‘পাপা’ বলে ডাকত। সর্ব ক্ষণ ‘পাপা এটা খাও, পাপা ওটা খাও’ করেই যেত ও।” এতেই বোঝা যাচ্ছে পল্লবী সাগ্নিককে ঠিক কতটা ভালোবাসতেন। সাগ্নিকের ব্যাপারে কতটা কেয়ার করতেন আর সবথেকে বড় কথা পল্লবী এই সম্পর্কটাকে নিয়ে ভীষণ সিরিয়াস ছিলেন।
আরো পড়ুন: আগামী সপ্তাহেই ফলপ্রকাশ হ’তে পারে মাধ্যমিকের, জেনে নিন বি’শ’দে
তবে এখানে উঠে আসে আর একটা বড় প্রশ্ন। সাগ্নিকও কি এতটাই ভালবাসতেন পল্লবীকে? প্রত্যুষা এই প্রশ্নের উত্তরে জানালেন, শুরুর দিকে তো তাঁর সেটাই মনে হত। শ্যুটিংয়ের সেটে চলে গিয়ে প্রেমিকাকে চমকে দেওয়া থেকে শুরু করে প্রেমিকার মান ভাঙার জন্য চকোলেট, গোলাপ ইত্যাদি নিয়ে আসা। এ সব কিছুই প্রত্যুষা নিজের চোখে দেখেছেন।
কিন্তু সাগ্নিকের পুরোনো সম্পর্কের কথা জানার পর থেকে পল্লবীর প্রতি সাগ্নিকের ভালোবাসাটা তাঁর কাছে কেমন যেন মেকি লাগতে শুরু করে। তাঁর মনে একটাই প্রশ্ন ঘুরতো বারবার, “যে ছেলে এত সহজে সাত বছরের সম্পর্ক ছেড়ে বেরিয়ে আসতে পারে, পল্লবীর সঙ্গেও সে রকম করবে না তো?” এমনটাই দাবি করেছেন পল্লবীর প্রাক্তন রুমমেট প্রত্যুষা পাল।