দীর্ঘদিন ধরে এসএসসি নিয়ে বিবাদ লেগে রয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। কিছুতেই যেন এই জট কাটতে চাইছে না। বহুবার বহু আবেদনকারী আবেদন করেও শেষ পর্যন্ত পরীক্ষায় বসতে পারেননি। আবার যে সকল পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় বসেছেন কাজের ফলাফল এখনো পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। গতবছর সল্টলেকের বিকাশ ভবনের সামনে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের অবস্থান বিক্ষোভ রীতিমতো প্রশাসনকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করেন পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে দেখা করে।
সাময়িক সমাধান হলেও সমস্যার কখনোই সম্পূর্ণভাবে কাটেনি। এবার সেই ক্ষোভ আছড়ে পড়লো রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর বাড়ির সামনে। এসএসসি চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ বিক্ষোভ দেখালেন শিক্ষামন্ত্রী সামনে। কালিন্দীতে ব্রাত্য বসুর বাড়ির সামনে সমস্ত নিয়ম বিধি মেনে অবস্থান-বিক্ষোভ করলেন পরীক্ষার্থীরা। শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন তারা। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের আটকালেও তারা মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার দাবিতে একেবারেই অনড়।
রবিবার দুপুর তিনটে আচমকাই লেকটাউনে ব্রাত্য বসুর বাড়ির সামনে পোস্টার হাতে জমায়েত হতে দেখা যায় একদল তরুণ-তরুণী কে। তাদের সকলের হাতে যে পোস্টটার ছিল সেখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ দেখা গেছে। তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে অভিনন্দন জানিয়েছেন তারা। কিন্তু মন্ত্রীর বাড়ির সামনে এই জমায়েত দেখে ছুটে আসেন পুলিশ, ভীর সরানোর চেষ্টা করা হয়।
সংবাদমাধ্যম এসে পৌঁছানোর পর তাদের সামনে একজন মহিলা বলেন, আমরা এখানে কোন সমস্যা সৃষ্টি করতে আসিনি। আমাদের একটাই বক্তব্য, আমরা ব্রাত্য বসুর সঙ্গে দেখা করব। কিন্তু নিরাপত্তারক্ষীদের বক্তব্য অনুযায়ী, আগাম অনুমতি ছাড়া মন্ত্রীদের সঙ্গে দেখা করা যায়না। অন্যদিকে মন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎকারের দাবিতে অনড় রয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। ফলে সব মিলিয়ে ব্রাত্য বসুর বাড়ির সামনের পরিস্থিতি এখন রীতিমত উত্তপ্ত।
ইতিমধ্যেই পুলিশ সূত্রে খবর পাওয়া গেছে, যেসকল শিক্ষার্থীরা বাড়ির সামনে জমায়েত করেছেন তারা প্রত্যেকে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। এমনকি মেধা তালিকায় তাদের নাম রয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলেও নিয়োগপত্র তারা হাতে পাননি। নিয়োগে অস্বচ্ছতার দাবিতে তারা গত বছরও সল্টলেকে অবস্থান বিক্ষোভে সামিল হয়েছিলেন। সেই সময়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৫ জনের একটি প্রতিনিধিদল করে দেওয়ার চেষ্টা করেন। পরবর্তীকালে তাদের পাঁচজনকে শিক্ষক হিসেবে চাকরিতে নিয়োগ করা হয়।
স্বাভাবিকভাবেই এ থেকে বোঝা যায়, চাকরি নিয়োগের ক্ষেত্রে অস্বচ্ছতা রয়েছে। আরো একবার বঞ্চিত হয়েছেন যোগ্য এবং উর্ত্তীন্ন প্রার্থীরা। তাই এই বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করার দাবিতে তারা শান্তিপূর্ণ অবস্থান করেছেন। তবে এখনো পর্যন্ত ব্রাত্য বসু তরফ থেকে কোনো কথা শোনা যায়নি।