করোনা অনেক মানুষের কর্মসংস্থান কেড়ে নিয়েছে। হাজার হাজার মানুষ বেকার হয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে শহর তথা বিভিন্ন রাজ্যে গরিব-দুঃস্থ অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছেন সরকার। সেই সাথে সাথে সাহায্যের জন্য হাত বাড়িয়ে দিয়েছে বেশ কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাও। সরকারের তরফে ‘মা ক্যান্টিন’-এর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে কম খরচে বা নিখরচায় পেট ভরা খাবারের বন্দোবস্ত করার জন্য।
বিভিন্ন প্রান্তে কমিউনিটি কিচেনও তৈরি হয়েছে। ঠিক সেরকমই এক উদ্যোগ হল রুটি গাড়ি। নামটা শুনতে একটু অদ্ভুত লাগছে ঠিকই, কিন্তু এর কর্মসূচি অসাধারণ। বিজ্ঞানের আশীর্বাদে সহজেই খাবার তৈরি হয়ে যাচ্ছে। শহরের বিভিন্ন প্রান্তে এই রুটি গাড়ি ঘুরতে দেখা যাচ্ছে। রুটি তৈরির সমস্ত ব্যবস্থা গাড়িতেই আছে। আধুনিক মেশিনের মাধ্যমে গাড়িতেই রুটি তৈরি হচ্ছে। তারপর সেগুলো সাধারণ মানুষের মধ্যে বিতরণ করা হচ্ছে। শুধু শুকনো রুটি নয়, সাথে তরকারি, মিষ্টিও থাকছে।
শহরের বুকে এরকম গাড়ির সংখ্যা মোট ৫টি। তার মধ্যে একটি হল হরিরাম চ্যারিটেবল ট্রাস্টের। প্রথম লকডাউনের সময়ে এই সংস্থা সাধারণ মানুষের মধ্যে খাবার বিতরণের উদ্যোগ নেয়। প্রথমে কমিউনিটি কিচেন তৈরি করে এই কাজ করা হলেও ২০২০-র অগাস্ট থেকে তা পাল্টে যায়। দিল্লি থেকে আনানো হয় একটি রুটি তৈরির মেশিন। কলকাতায় বসেই এই মেশিনকে একটি গাড়ির মধ্যে ভরে ঘুরতে শুরু করে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে। নাম দেওয়া হয় রুটি গাড়ি। আগে শহরের বিভিন্ন বস্তি এলাকায় গিয়ে খাবার দেওয়া হত। এখন প্রতিদিন শহরের বিভিন্ন হাসপাতালের বাইরে এই গাড়ি ঘোরে।
বিনামূল্যে গরিবদের মধ্যে খাবার বিলি করা হয়। শুধুমাত্র গরিব নয়, রোগীর পরিবাররাও এই গাড়ির বাইরে লাইন দেন। নিখরচায় বা স্বল্প টাকায় রুটি তরকারি খেয়ে সাধারণ মানুষের খিদে মিটছে। মেশিন খুব চটপট কাজ করে। ঘন্টায় ৮০০টি রুটি তৈরি হয় এই মেশিনে। এখনও পর্যন্ত এই সংস্থা প্রায় প্রতিদিনই এই কাজ করে চলেছে। কলকাতার SSKM, NRS, R. G. KAR ইত্যাদি নানা হাসপাতালের বাইরে এই গাড়ি দেখতে পাওয়া যাবে। এখন প্রতিদিন প্রায় ৩০০ বেশি মানুষ এই পরিষেবা পায়। এই অভিনব উদ্যোগের সুবিধা পাচ্ছেন শহরবাসী।