দোল বা হোলি কল্পনা করা যায় না রং ছাড়া। কিন্তু ঝাড়খণ্ডের বোকারো জেলার কাসমার ব্লকের দুর্গাপুর গ্রামের মানুষ হোলি খেলে না বহু বছর ধরে। হোলির দিনে আবীর, রং কেউ ছুঁয়েও দেখে না। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে চলে আসছে এই ঐতিহ্য।
এর পেছনে গ্রামের মানুষ অনেক ধরনের বিশ্বাসের কথা উল্লেখ করে। কথিত আছে, প্রায় সাড়ে তিনশো বছর আগে দুর্গাপুরে রাজা দুর্গাপ্রসাদ দেব রাজত্ব করতেন। গ্রামের ঐতিহাসিক দুর্গা পাহাড়ের পাদদেশে ছিল তাঁর হাভেলি। তিনি খুব জনপ্রিয় ছিলেন।
পদ্মা (রামগড়) রাজার সাথে যুদ্ধে তাঁর পরিবারের প্রতিটি সদস্য নিহত হয়। সেদিন ছিল হোলির দিন। এই দুঃখে মানুষ তখন থেকে হোলি খেলে না এই গ্রামে। মনে করা হয়, হোলি খেললে গ্রামে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে।
আরো পড়ুন: “কাশ্মীর ফাইলস” ফিল্মটি দেখার জন্য ছুটি ঘো’ষ’ণা অসম সরকারের
দুর্গা পাহাড়ী বদরও বাবা নামেও পরিচিত। গ্রামবাসীদের মতে, বদরাও বাবা রং পছন্দ করেন না। এই কারণেই পূজোয় বলি হলে ছাগল ও মোরগও সাদা রঙের দেওয়া হয়। বদরাও বাবার ইচ্ছার বিরুদ্ধে গ্রামে রং-আবির ব্যবহার করলে গ্রামবাসীদের তার ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়।
গ্রামে নানা ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। তাতে মানুষ ও পশুপাখির ক্ষতি হয়। বদরও বাবা যাতে রাগ না করেন তাই গ্রামে হোলি উদযাপন করা হয় না। কিছু গ্রামবাসী আরও বলে যে হোলি না খেলার পিছনে আরও একটি কাহিনী রয়েছে।
প্রায় ২০০ বছর আগে কিছু মালহার এখানে এসে দুটি ভিন্ন জায়গায় বাসা বেঁধেছিল। মালহাররা প্রচুর হোলি খেলে। ওই দিনে মৃত্যু হয় ৫ মালহারের। গ্রামের দুই ডজনের বেশি গরু মারা যায়। অন্যান্য অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটে। এই ঘটনার পর গ্রামের মানুষ হোলি খেলা চিরতরে বন্ধ করে দেয়।