ভারতবর্ষের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে হাজার হাজার বছরের পুরনো বহু মন্দির। একেকটি মন্দিরকে কেন্দ্র করে স্থানীয় এলাকায় একেক রকমের গল্প প্রচলিত রয়েছে। রাজস্থানেও রয়েছে এমন বহু প্রাচীন ভাস্কর্য যেগুলিকে কেন্দ্র করে সাধারণের মধ্যে বহু কৌতুহল, এবং অলৌকিক গল্পের প্রচলন রয়েছে। রাজস্থানের ভানগড় ফোর্ট অথবা কুলধারা গ্রাম ছাড়াও এই রাজ্যেই রয়েছে একটি মন্দির যে মন্দিরকে কেন্দ্র করে জড়িয়ে রয়েছে বহু অজানা রহস্য।
রাজস্থানের মরুভূমি ঘেঁষা বারমের শহর থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে সিহনি গ্রামে রয়েছে কিরাডু মন্দির। অসাধারন ভাস্কর্য শিল্পের নিদর্শন এই মন্দিরটিকে আজও অভিশপ্ত বলেই মনে করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তারা মনে করে সন্ধ্যের পরে এই মন্দিরে গেলে কেউ আর বেচে ফিরতে পারেন না। অভিশাপের কারণে তারা পাথরে পরিণত হয়। তাই সন্ধ্যার পরে এই মন্দিরে কেউ প্রবেশ করেন না।
সাধারণের মনে এমন বিশ্বাসের পেছনে রয়েছে একটি বহু প্রচলিত গল্প। সেই গল্প অনুসারে, বহু বছর আগে এই মন্দিরে একদল শিষ্য নিয়ে একজন সন্ন্যাসী এসেছিলেন। শিষ্যদের মধ্যে থেকে একজন আচমকাই অসুস্থ হয়ে পড়েন।
সন্ন্যাসী তখন গ্রামবাসীদের থেকে সাহায্য প্রার্থনা করেছিলেন। তবে সেই সময় তাকে সাহায্য করার মত কেউ এগিয়ে আসেননি। যে কারণে সন্ন্যাসী ভীষণ রেগে যায় এবং গ্রামবাসীদের এই আচরণের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের অভিশাপ দিয়ে বসেন।
যে গ্রামের মানুষের হৃদয় এত কঠিন, তাদের পাথর হয়ে যাওয়াই ভালো! সন্ন্যাসীর এই অভিশাপে মুহুর্তের মধ্যে পাথরে পরিণত হন গ্রামের সকল বাসিন্দা। তবে ওই গ্রামেরই এক মহিলা তাদের সাহায্য করেছিলেন। তাই সন্ন্যাসী তাকে গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র সরে যাওয়ার কথা বলেন এবং তাকে বলেছিলেন যাওয়ার সময় যেন তিনি পেছন ফিরে না তাকান। তবে কৌতূহলবশত পিছনে ফিরে তাকিয়ে ফেলেছিলেন ওই মহিলা। যার ফলে মুহূর্তের মধ্যেই পাথরে পরিণত হয়ে যান তিনিও। এই আশ্চর্য ঘটনার গল্প আজও ওই গ্রামের মানুষের মুখে মুখে ফেরে। যে কারণে তারা সন্ধ্যের পরে ওই মন্দিরের আশেপাশে যাওয়াটা এড়িয়েই চলেন।