কোভিডের আগে অতিমারী রোগ বলতে মানুষ ক্যান্সারকেই বুঝত। কারণ আজকালকার চিকিৎসা বিজ্ঞান এমন অবস্থায় পৌঁছেছে যে ক্যান্সার ছাড়া বাকি সব ধরণের অসুখেরই চিকিৎসা হয়। তবে সম্প্রতি নতুন এক গবেষণায় ইঙ্গিত পাওয়া গেছে যে কোভিডের পর এ বার ক্যানসারের কারণেও চারিদিকে মহামারি ছড়িয়ে পড়তে পারে। আর এর প্রধান কারণ হল কোভিড। কোভিডের প্রভাবেই ইউরোপের ক্যান্সার সংক্রান্ত বড় চিকিৎসাক্ষেত্রটি এক দশকের মধ্যে আরও সঙ্কটজনক পরিস্থিতির মুখোমুখি হবে বলে ধারণা করা যাচ্ছে।
ল্যানসেট অনকোলজিতে প্রকাশ পাওয়া ক্যান্সারের এক গবেষণায় ইউরোপের গ্রাউন্ডশট কমিশন গত ১২ বছরে ইউরোপ জুড়ে ক্যান্সার রোগীদের বিষয়ে সংগৃহীত তথ্য থেকে জানা গিয়েছে যে, গত দুই বছরে ইউরোপ জুড়ে আনুমানিক ১০ লক্ষ রোগীর ক্যান্সারের চিকিৎসায় গাফিলতি হয়েছে। গত দু’বছরে করোনা পরিস্থিতিতে হাসপাতাল, চিকিৎসাকেন্দ্রে পা রাখতে চাইছিলেন না কেউই। বিশ্ব জুড়ে আতঙ্ক গ্রাস করে নিয়েছিল।
অনেকেই ভয় পেয়েছিলেন এই ভেবে যে হাসপাসালে বা চিকিৎসকের কাছে গেলে সেখান থেকে তারা সংক্রমিত হতে পারে। অবশ্য এহেন আতঙ্ককে সেই মুহুর্তে একবারে উড়িয়ে দেওয়াও যাচ্ছিল না। সেই পরিস্থিতিতে চিকিৎসা করা তো দূর, ইউরোপের সরকারি তরফে ভিড় এড়িয়ে চলার জন্য বার বার সাধারণ জনগণকে সতর্ক করা হয়েছিল। হাসপাতাল যেহেতু এমনিতেই ভিড়ের জায়গা, তাই ক্যান্সার রোগীরাও কোভিড সংক্রমণ থেকে বাঁচতে একেবারেই হাসপাতালমুখী হচ্ছিলেন না।
আরো পড়ুন: পড়াশোনা করার বয়সেই বি’য়ে করে সংসার সা’ম’লে’ছেন এই ৫ ব’লি সুন্দরীরা
সমীক্ষা থেকে এও জানা গেছে, কোভিডের মারাত্মক পর্যায় অর্থাৎ প্রথম বছরে ইউরোপে প্রায় ১৫ লক্ষ ক্যান্সার রোগীর কোনো রকম কেমোথেরাপি বা অস্ত্রোপচারও হয়নি। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্রথমে ক্যান্সার রোগীর উপসর্গগুলি বোঝা যায় না। এই সময়ে যদি চিকিৎসা শুরু করা যায় তাহলে সুস্থ হয়ে যাওয়ার খুব সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু করোনা সংক্রমণের প্রভাবে বহু রোগীই ভয়ে প্রাথমিক পর্যায়ে বারবার চিকিৎসকের কাছে যেতে চাননি।
আর ক্যান্সার সবথেকে তাড়াতাড়ি ছড়িয়ে পড়ে নিয়ম মাফিক চিকিৎসার অভাবে এবং অল্প সময়ে বড় আকার ধারণ করে। এক্ষেত্রেও তাই ঘটেছে বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা। এ প্রসঙ্গে গবেষকদের দাবি, ইউরোপে ক্যানসার রোগীদের আয়ুও কমে যাওয়ার ব্যাপারে মূলত দায়ী কোভিড।