গত বছর থেকেই তৃণমূল সাংসদ এবং অভিনেত্রী নুসরাতের সঙ্গে তার স্বামী নিখিল জৈন বিবাহ সম্পর্ক বিচ্ছেদ নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে, যদিও সেই সময় বিবাহ সম্পর্ক বিচ্ছেদ নিয়ে অভিনেত্রী নুসরাত এবং স্বামী নিখিল জৈন কোনরকমে মন্তব্য করতে চাননি। জানা গিয়েছিল যে, নিখিল এবং নুসরাত আর একসঙ্গে এক ছাদের তলায় থাকছেন না। এই ব্যাপারটা জানাজানি হওয়ার পরেই তুমুল জল্পনা শুরু হয়েছিল নুসরাত এবং নিখিলের বিবাহ সম্পর্কের বিচ্ছেদ নিয়ে। একদিকে যখন নুসরাত রাজনীতি তিনি নিয়ে ব্যস্ত ছিল, তেমনি ব্যস্ত ছিল অভিনেতা যশকে নিয়ে। সেই মুহূর্তে সোশ্যাল মিডিয়ায় উঠে আসে নুসরাত এবং যশের একসঙ্গে রাজস্থানে ঘুরতে যাওয়ার ছবি, যার পরপরই গোটা সোশাল মিডিয়া জুড়ে নুসরাত এবং যশের নতুন প্রেমের কাহিনী নিয়ে জল্পনা শুরু হয়।
যদিও নুসরাত এবং যশ কেউই তাদের সম্পর্ক নিয়ে কোনোরকম মুখ খোলেনি। অন্যদিকে নিখিল জৈন সেও তার মুখ খোলেনি তার সঙ্গে নুসরাতের বিবাহ বিচ্ছেদ নিয়ে। এতদিন পর্যন্ত সকলেই সন্দেহ করছিল নুসরাত এবং নিখিলের বিবাহবিচ্ছেদ সম্পর্কটিকে নিয়ে। সেই সন্দেহ কেই এইবার সত্যি বলে সকলের সামনে আনল অভিনেত্রী নুসরাত জাহান। ছয় মাস ধরে চলছিল বিপুল পরিমাণে জল্পনা তারই এবার অবসান ঘটিয়ে দিলো নুসরত। সংবাদ মাধ্যমে তিনি জানান যে, তার এবং নিখিলের বিয়ে নাকি অবৈধ। যেহেতু তাদের বিয়েটা তুরস্কের নিয়মে হয়েছিল, সেই জন্যই তাদের বিয়েটা অবৈধ।
এক ধর্মের কেউ যদি অন্য কোন ভিন্ন ধর্মের কাউকে বিয়ে করে তবে তাদের প্রয়োজন হয় স্পেশ্যাল ম্যারেজ অ্যাক্ট ১৯৫৪। এই আইন মতে বিয়ে করলে কবে বিবাহ স্বীকৃতি পাওয়া যায়। যেহেতু নুসরাত এবং নিখিলের বিবাহ হিন্দু এবং মুসলমানের মধ্যে হয়েছে সেই জন্যই তাদের বিবাহ স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য স্পেশাল ম্যারেজ অ্যাক্ট প্রয়োজন। কিন্তু নুসরাত এবং নিখিলের ক্ষেত্রে এই অ্যাক্ট অনুযায়ী বিয়ে হয়নি, সেই জন্য এটি অবৈধ।
নুসরাত আরো বলে যে, তাদের সম্পর্কটা লিভ ইন রিলেশনশিপে বলা যায়। সেই জন্যেই কোনরকম ডিভোর্স দরকার পড়বে না। কিন্তু স্পেশাল ম্যারেজ অ্যাক্ট এই ব্যাপারে কি বলছেন? আসুন জেনে নি। ১৯৫৪ সালে ভারতের সংসদে স্পেশাল ম্যারেজ অ্যাক্ট আনা হয়, যেখানে বলা হয় যে এক ধর্মের মানুষ যদি অন্য ধর্মের মানুষকে বিয়ে করতে চান, তাহলে এই অ্যাক্ট অনুযায়ী আইনত ভাবে যে কেউ স্বামী-স্ত্রীর মর্যাদা পেতে পারে।
এই বিষয়টিকে নিয়ে আইনজীবী অনির্বাণ গুহ ঠাকুরতা বলেছেন যে,” সংবিধানে রয়েছে যদি কোন দুটি ভিন্ন ধর্মের মানুষ বিয়ে করতে চান, তাহলে তারা এই আইন অনুযায়ী বিয়ে করতে পারবেন। এই বিষয়ে কোন রকমে বাধা নেই। অবশ্যই স্পেশাল ম্যারেজ অ্যাক্ট অনুযায়ী আইনত বিয়ে করতে হবে। যদি কেউ করে থাকে তাহলে সেই বিবাহ স্বীকৃতি পাওয়া যেতে পারে। কিন্তু, যদি কেউ না করে থাকে তবে সেই ক্ষেত্রে অবৈধ বলা যেতে পারে। নুসরাত যদি বলে থাকে যে, তাদের স্পেশাল ম্যারেজ অ্যাক্ট অনুযায়ী রেজিস্ট্রি হয়নি,তার ক্ষেত্রে অবশ্যই অবৈধ কথাটা আসতেই পারে।”