সমাজের প্রত্যেকটা ধাপেই ন্যায়-অন্যায়ের একটি জায়গা আছে এবং সেই ন্যায়-অন্যায়ের দিক কেন্দ্র করেই তৈরি হয়েছে আইন-আদালত ,যে আইন আদালতের মাধ্যমে একজন মানুষ তার জীবনের ন্যায্য অধিকার পেয়ে থাকেন, অনেক সময় হতে পারে যে ন্যায় পেতে দেরি হয়, কিন্তু একটা না একটা সময় ঠিক সত্যেরই জয় হয়ে থাকে, এবং সেরকম একটি ঘটনা ঘটেছে পশ্চিমবঙ্গের এক শিক্ষিকার সঙ্গে।
৩০ বছর ধরে তিনি লড়ছিলেন এটি লড়াই, অবশেষে সেই লড়াইয়ে জয়ী হয়েছেন এই প্রাক্তন শিক্ষিকা। বাকি ছিল ২৫ বছরের বকেয়া বেতন এবং যেটাই এই শিক্ষিকাকে মিটিয়ে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
১৯৭৬ সালে হাওড়ার শ্যামপুর হাই স্কুলের শিক্ষিকা ছিলেন শ্যামলী ঘোষ। শিক্ষিকার চাকরি পেয়ে থাকলেও ৪ বছর তিনি এই চাকরি করতে পেরেছিলেন, কারণ ৪ বছর পরেই দেখা দিয়েছিল একটি বিপদ।
আরো পড়ুন: সন্তানের আশায় সঙ্গীর গ’র্ভ’নি’রো’ধ’কে ফুটো করে ‘বী’র্য’ চুরির অভিযোগে ধৃ’ত মহিলা
সেই সময় ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক তাঁকে স্কুল থেকে বের করে দিয়েছিলেন,এইজন্যে শ্যামলীদেবী ১৯৮৬ সালে হাইকোর্টের কাছে একটি মামলা করেছিলেন কিন্তু, এই মামলা দিনের পর দিন বছরের পর বছর চলে যাচ্ছিল পাওয়া যাচ্ছিল না কোন বিচার।
২০০৫ সালে শ্যামলীদেবীর অবসর গ্রহণের দিন ছিল এবং সেই দিনও তাঁকে স্কুলে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। সেই এই মামলার রায় হয় ২০১৩ সালে তখন বিচারপতি ছিলেন অশোককুমার যিনি নির্দেশ দিয়েছিলেন যে শিক্ষিকার সমস্ত টাকা মিটিয়ে দেওয়ার, এরপরে পাওয়া যাচ্ছিল পেনশন কিন্তু আরো দশ বছর কেটে গেছে, এই শিক্ষিকা অর্থাভাবে ভুগছেন।
আইনজীবীদের মাধ্যমে এই মামলাতে লড়াই করার জন্য তাঁর অর্থের জোর ছিল না, সেই কারণে অবশেষে নিজেই নিজের জন্য শুরু করেন লড়াই। অবশেষে এই গোটা ব্যাপারে এগিয়ে আসেন প্রাক্তন আইনজীবী রবিলাল মৈত্র।
আরো পড়ুন: সন্তানের আশায় সঙ্গীর গ’র্ভ’নি’রো’ধ’কে ফুটো করে ‘বী’র্য’ চুরির অভিযোগে ধৃ’ত মহিলা
আদালতে তিনি এই শ্যামলী দেবীর হয়ে নানান প্রশ্নের উত্তর দিয়েছিলেন। এরপরেই সংবাদ মাধ্যম সূত্রে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় গোটা ব্যাপারটি সম্পর্কে জানতে পারেন এবং এই ব্যাপারে তিনি তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেন যদিও তার পরে পাওয়া যায় সুরাহা। ২৫ বছর ধরে শ্যামলী দেবী যে বেতন পাচ্ছিলে না সেটা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
এই টাকাটা দিতে হবে ২০১৩ সালের থেকে ১০ পার্সেন্ট সুদে। স্কুল এডুকেশন কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি এবং এক সপ্তাহের মধ্যে যাতে সমস্ত টাকা শিক্ষিকাকে দিয়ে দেওয়া হয় সেটাও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
শ্যামলীদেবীর বক্তব্য, তিনি সমস্ত টাকা বুঝে পাওয়ার পর এই ব্যাপারটির মামলায় তিনি নিজেই তুলে নেবেন। অবশেষে দীর্ঘ দিনের মামলাতে জয়ী হওয়ার পর আনন্দে দেখা গেল শ্যামলীদেবীর চোখে জল।