সব খবর সরাসরি পড়তে আমাদের WhatsApp  Telegram  Facebook Group যুক্ত হতে ক্লিক করুন

শিয়ালদহের ফু’ট’পা’তে ১৫ দিন এ’কা কাটিয়েছি! জী’ব’ন’টা’ই আমার কা’ছে সিরিয়াল: সুস্মিতা রায় চক্রবর্তী

সিরিয়াল অথবা সিনেমা এমন একটা জায়গা যেখানে আমরা যাকে যেমনভাবে দেখি বাস্তবে কিন্তু তিনি একেবারে অন্যরকম মানুষ। আজ কথা বলব কৃষ্ণকলির পার্বতী, অপরাজিত অপুর দিৎসা, অর্থাৎ সুস্মিতা রায় চৌধুরীর কথা। চিরকাল যাকে আমরা দেখেছি নেগেটিভ চরিত্রে অভিনয় করতে। সংবাদমাধ্যমের সামনে খোলামেলা কথা বলতে শোনা গেল তাকে। টেলিভিশনের পর্দায় কিভাবে তিনি প্রবেশ করলেন এই বিষয়ে তিনি বলেন, ছোটবেলা থেকেই অভিনয় করতে ভালোবাসেন তিনি। গোসাবা সুন্দরবনের মেয়ে সুস্মিতাকে যখনই জিজ্ঞাসা করা হতো বড় হয়ে তিনি কি হবেন, তখনই তিনি বলতেন বড় হয়ে তিনি অভিনেত্রী হতে চান। কিন্তু বাবা মা সরকারি চাকুরীজীবী হওয়ায় এই বিষয়ে প্রবল আপত্তি ছিল বাড়ির সকলের। ফলে ইন্ডাস্ট্রিতে আসার ব্যাপারে বাড়ি থেকে সম্মতি পাওয়া যায়নি। একদিন কলকাতায় পালিয়ে এসেছিলেন তিনি।সেই থেকে আস্তে আস্তে যুদ্ধ শুরু হয় তার।

 

View this post on Instagram

 

A post shared by Susmita Roy (@watchwithsusmita)

যেহেতু ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে থাকার জন্য সকলে দরকার একজন গডফাদার, সুস্মিতার সেইভাবে গডফাদার বলতে কেউ ছিলনা। প্রত্যেক দিনের খাবার এবং মাথার ছাদের জন্য লড়াই করতে হয়েছিল তাকে। শিয়ালদহের ফুটপাতে থাকতে হয়েছিল প্রায় অর্ধেক মাস। সোনারপুর থেকে সল্টলেক হেঁটে অডিশন দিয়েছিলেন তিনি টাকা না থাকার কারণে। বাড়ি থেকে সমস্ত সম্পর্ক ছেদ করে দেবার পরেও তিনি তার অদম্য জেদ ধরে রেখেছিলেন। তার লক্ষ্য ছিল অভিনয় কে সম্বল করে নিজের পয়সায় বাড়ি গাড়ি কেনার। তবে আজ তার বাড়ির সকলে বিশেষ করে মা খুব গর্বিত অভিনেত্রীর এই সাফল্যে।

 

View this post on Instagram

 

A post shared by Susmita Roy (@watchwithsusmita)

তবে বারবার নেগেটিভ চরিত্রে অভিনয় করতে কেন ইচ্ছা হয়েছে তার এ কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, না অনেক পজিটিভ চরিত্র করেছিলেন তিনি কিন্তু নেগেটিভ চরিত্রে সাফল্য পেয়েছেন বেশি। নেগেটিভ চরিত্রে যেভাবে লোকে গালাগালি দেয়, সেগুলি তিনি বেশি এনজয় করেন। জীবনের খারাপ সময় গুলো কে একদিন পিছনে ফেলে এসে আজ খ্যাতির শিরোনামে পৌঁছেছেন তিনি। তবে সমস্ত জীবনটাই তার কাছে ছিল একটি চমকের মত। কৃষ্ণকলি তে পার্বতী চরিত্র করার সময় তিনি ছিলেন অন্তঃসত্ত্বা। কিন্তু কোনোভাবেই তিনি পিছিয়ে যান নি। ডেলিভারির এক সপ্তাহ আগে পর্যন্ত তিনি শ্যুটিং করেছিলেন। কোন প্রবলেম ছিল না তার। কিন্তু চিকিৎসকের একটি ছোট্ট ভুলে হয়তো সন্তান প্রসব করেন তিনি। মায়ের শরীরের সমস্ত কষ্ট সহ্য করেও মাতৃত্ব অনুভূত করতে পারেননি তিনি। সেই কষ্ট আজ ভুলে এগিয়ে গেছেন তিনি।

 

View this post on Instagram

 

A post shared by Susmita Roy (@watchwithsusmita)

তবে ছেলেটা হয়তো এতটা সোজা হতো না যদি না তার পরিচালক প্রযোজক তাকে সাহায্য করতেন। বাস্তব এবং চরিত্র দুটোকেই অন্যভাবে দেখতেন তিনি। তাই বাস্তব জীবনে মৃত সন্তানের জন্ম দেওয়ার পরেও চরিত্রে জীবন্ত সন্তানের মা হয়ে গিয়েছিলেন সুস্মিতা। খারাপ সময় এর প্রভাব শ্বশুর বাড়িতেও পড়তে দেননি তিনি। তার স্বামী সব্যসাচী চক্রবর্তী একজন নিউজ অ্যাঙ্কার। দেওর চক্রবর্তী ও টেলিভিশনের জগতে রয়েছে। সংসার থেকে শুরু করে ঘর গোছানো দোকান বাজার সবই তিনি একা করেন। পাশাপাশি বাইরের জগত সামলান নিপুণ হাতে। বর্তমানে তিনি অভিনয় করেছেন অপরাজিত অপু তে। সিরিয়ালে সবেমাত্র অন্নপূর্ণা পূজা দেখানো হচ্ছে, সেখানে সুস্মিতা ওরফে দিৎসা পূজার সমস্ত পায়েস নষ্ট করে দেয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এখন গল্প এগিয়ে যাচ্ছে। এই ভাবেই চলছে তার ব্যক্তিগত এবং কাজের জায়গা।