আজকালকার এই ব্যস্ততার জীবনে সকলেই অনলাইন ফুড সার্ভিস ডেলিভারী বিভিন্ন সংস্থার ওপর আমরা বড়ো বেশি নির্ভরশীল হয়ে পরেছি। এরকম বহু মানুষ রয়েছে যাদের নিজের খাবার নিজে বানানোর সময় নেই ফলে ফোনের মাধ্যমে একটি অ্যাপ থেকেই খাবার অর্ডার করে নেয় বেশিরভাগ মানুষই।
সেরকমই বেঙ্গালুরুর রোহিতকুমার সিংহ খাবার অর্ডার করেন একটা ফুড ডেলিভারী সংস্থায়। একটু সময় বেশি লাগতেই অধৈর্য হয়ে পড়েন তিনি। বার বার ফোন করে জিজ্ঞেস করতে থাকেন আর কতক্ষন লাগবে, কখন আসবেন, বলে সেই ডেলিভারী বয় কে। রোহিত বাবুর খিদে সময়ের সাথে বাড়তে থাকলে তার কথাও বেশ রূঢ় শোনায়।
এভাবে কিছুক্ষন চলার পর রাহুল বাবু আবার ফোন করেন এবং একই কথা জিজ্ঞেস করেন। যথারীতি ডেলিভারী বয় বলেন আর ৫মিনিটে আসছি। তাঁর কথা মতোই ৫মিনিটে সে এসে রাহুল বাবুর ফ্ল্যাটে পৌঁছোন। আর দরজা খুলতেই রোহিত কুমার সিংহ যা দেখেন তাতে তাঁর করা ব্যাবহারের জন্য সে খুবই অনুতপ্ত হয়।
আরো পড়ুন: গরু পাচার কা’ণ্ডে বার্ষিক ২৪ কোটির চু’ক্তি, বি’রা’ট ফেঁ’সে গেলেন অনুব্রত
সে দেখে – দরজার সামনে খাবারের প্যাকেট হাতে দাঁড়িয়ে ডেলিভারি এগজিকিউটিভ কৃষ্ণাপ্পা রাঠৌর। বয়স চল্লিশের কাছাকাছি একটি মানুষ। কাঁচাপাকা চুল। মুখে স্মিত হাসি। হাতে ক্রাচ। এই মানুষটিকে দেখে রোহিতের সব রাগ যেন কোথায় উধাও হয়ে গিয়েছিল। তাঁর নিজের করা ব্যাবহার নিজেই খুব লজ্জিত হয়ে পড়েছিলেন তিনি।
কৃষ্ণাপ্পা রাঠৌরের থেকে তিনি জানতে চান তার বাড়িতে কে কে আছে। এই বয়সেও তিনি কেনো এই কাজ করছেন তাও এরকম অবস্থায়। কৃষ্ণাপ্পা জানিয়েছিলেন, একটি ক্যাফেতে তিনি কাজ করতেন। অতিমারির সময় সেই কাজ চলে যায় তাঁর। বাড়িতে স্ত্রী সহ তিন সন্তান, রয়েছে। আর্থিক টানাপড়েনের কারণে সন্তানদের ঠিকমতো পড়াশোনা করাতে পারছেন না।
ক্যাফের কাজ চলে যাওয়ার পর খাবার সরবরাহ সংস্থার কাজে ঢোকেন। সকালে বাড়ি থেকে বেরোন ক্রাচে ভর করে। সারা দিন খাবার সরবরাহ করে তার পর বাড়ি ফেরেন। আর তাঁর মুখ থেকে এই কথা শোনার পর রোহিত বাবুর খুব অপরাধী মনে হয় নিজেকে।
তাঁর এই আচরণ যে ঠিক হয়নি বুঝতে দেরী করেন নি তিনি। আর তাঁর কোথায় কিছু আবেগপ্রবণ হয়েও পড়েন। এই সমস্ত ঘটনার কথাই নেট মাধ্যমে তিনি জানান। আর সেই ডেলিভারী এক্সিকিউটিভ – এর কাছে তাঁর করা ব্যাবহারের জন্য ক্ষমাও চান।