সব খবর সরাসরি পড়তে আমাদের WhatsApp  Telegram  Facebook Group যুক্ত হতে ক্লিক করুন

পরিবারের মৃ’ত সদস্যদের সা’থে খাওয়া-দাওয়া, এমনকি নাচানাচি! এই জনজাতির অ’দ্ভু’ত উৎসব

মৃত্যুর পর কোথায় যায় মানুষ? এ বিষয়ে বিভিন্ন সম্প্রদায়, বিভিন্ন ধর্ম, এমনকি বিভিন্ন সংস্কৃতির মধ্যেও মতবিরোধ আছে। এ প্রসঙ্গে ইন্দোনেশিয়ার তোরাজা সম্প্রদায়েরও একটি নিজস্ব মত রয়েছে। তোরাজারা তাদের মৃত স্বজনদের কিছুতেই কাছ ছাড়া করতে চায় না। প্রয়াত আত্মীয়দের সঙ্গে নিয়েই 'মা নেনে' নামক এক আশ্চর্য উৎসবে মেতে ওঠে তারা। তবে এই উৎসব অনেকের কাছে ভীষণ ভয়ের, আবার অনেকের কাছে ঘেন্নারও।

মৃত্যুর পর কোথায় যায় মানুষ? এ বিষয়ে বিভিন্ন সম্প্রদায়, বিভিন্ন ধর্ম, এমনকি বিভিন্ন সংস্কৃতির মধ্যেও মতবিরোধ আছে। এ প্রসঙ্গে ইন্দোনেশিয়ার তোরাজা সম্প্রদায়েরও একটি নিজস্ব মত রয়েছে। তোরাজারা তাদের মৃত স্বজনদের কিছুতেই কাছ ছাড়া করতে চায় না। প্রয়াত আত্মীয়দের সঙ্গে নিয়েই ‘মা নেনে’ নামক এক আশ্চর্য উৎসবে মেতে ওঠে তারা। তবে এই উৎসব অনেকের কাছে ভীষণ ভয়ের, আবার অনেকের কাছে ঘেন্নারও।

এই উৎসবের সময় কবর খুঁড়ে পূর্বপুরুষের মৃতদেহ বাইরে বের করে এনে সেই শবদেহের সঙ্গে সময় কাটানো হয়। এটাই নাকি এই উৎসবের রীতি। প্রতি বছর বর্ষাকালে প্রথমে সমাধি খুঁড়ে প্রিয়জনদের দেহাবশেষ তুলে আনে তোরজা সম্প্রদায়ের পুরুষরা। তারপর সেই মৃত প্রাণহীন দেহগুলিকে নতুন পোশাক পরানো হয়।

এরপর শবদের ভালো-মন্দ খাবার সহ মাদকদ্রব্য যেমন মদ, সিগারেট ইত্যাদি পরিবেশন করা হয়। অর্থাৎ জীবিত অবস্থায় পূর্বপুরুষরা যা যা ভালবাসতেন শবদেহগুলিকে তাই তাই দেওয়া হয়। তোরাজা নারী-পুরুষরা এই উৎসবে সাজানো দেহগুলির পাশে দাঁড়িয়ে আনন্দ করে ছবি তোলে, সেলফি তোলে।

তবে কি তোরাজারা কোনো বিলুপ্তপ্রায় সম্প্রদায়! না, একেবারেই নয়। ইন্দোনেশিয়ায় ১০ লাখ তোরাজা সম্প্রদায়ের মানুষ বসবাস করে। তার মধ্যে বেশিরভাগই থাকে দেশের দক্ষিণের পাহাড়ি এলাকা সুলাওয়েসি প্রদেশে।

তোরাজাদের পোশাক দেখলেই মনে হয় তারা যথেষ্ট আধুনিক। কিন্তু বহুকালের রীতি-রেওয়াজ থেকে সরে না এসে ‘মা নেনে’ উৎসবে প্রতি বছর সামিল হয়। যেহেতু তারা মৃত স্বজনদের কাছছাড়া করতে চায় না, তাই অনেক সময় মৃতদেহ দ্রুত সৎকার করে না তারা।

কখনও এক সপ্তাহ, আবার কখনও এক মাস পর্যন্ত নিজস্ব পদ্ধতিতে মমি করে বাড়িতেই রেখে দেওয়া হয় প্রয়াতের শরীর। মৃতের সমাধিও হয় বাড়ির মধ্যে বা বাড়ির লাগোয়া জমিতে।

সেইসব শবদেহ প্রতি বছর আগস্ট মাসে মাটি খুঁড়ে তুলে আনা হয়। ‘মা নেনে’ উৎসবের ক’দিন শবদেহগুলির সঙ্গে আনন্দে মেতে ওঠে বাড়ির অন্যান্য সদস্যরা। তাদের সাথে জীবিতের মতোই আচরণ করা হয়। নতুন পোশাক পরা মৃতদেহরা খাওয়াদাওয়ার সময় ডাইনিং টেবিলেও উপস্থিত থাকে। তাদের সঙ্গে নাকি কথাও বলেন জীবিতরা! কিন্তু মৃতেরা কী উত্তর দেয়?

এই প্রশ্নের উত্তর দিতে চায়না তোরাজারা। এ প্রসঙ্গে তারা জানায়, বিশেষত নতুন প্রজন্মের জন্যে ‘মা নেনে’ উৎসব খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই উৎসবের মাধ্যমে পারিবারিক মূল্যবোধ বাড়ে। অতীতের সঙ্গে সম্পর্কে মেতে ওঠেন সকলে। যদিও এই উৎসব কেন পালিত হয় সে সম্বন্ধে সঠিক কারণ তোরাজাদেরও জানা নেই।