বাংলার বাইরে সধবা হিন্দুদের মধ্যে প্রচলিত অন্যতম জনপ্রিয় একটি রীতি হল করওয়া চৌথ। হিন্দু বিবাহিত মহিলারা স্বামীর মঙ্গল কামনায় এবং দীর্ঘায়ু কামনায় এই ব্রত পালন করে থাকেন। বাঙালিদের যেমন শিবরাত্রি ব্রত, তেমনই অবাঙালি হিন্দুদের করওয়া চৌথ। উত্তর ভারতে এই ব্রতর প্রচলন রয়েছে। এই দিনে মহিলারা উপবাস করে থাকেন। স্বামীর মঙ্গলকামনায় হাতে তারা মেহেন্দিও পরেন।
তবে এই কঠিন ব্রত নিয়ে অনেক সময়ই হাসি ঠাট্টার ঝড় ওঠে নেটদুনিয়ায়। আধুনিক নেটজনতার কাছে এসব নিছকই বোকামি। একটা হিন্দু প্রথার প্রতি এত তুচ্ছ তাচ্ছিল্যকে ভালো চোখে দেখলেন না বলিউড অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাউত। তাই নিজের সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে এসব নিয়ে মুখ খুললেন। কঙ্গনা বরাবরই স্পষ্টভাষী। সোজা কথা সোজা ভাবে বলতেই বরাবর পছন্দ করেন। সেই কারণে অসংখ্য বার বিতর্কের মুখেও পড়েছেন তিনি। কঙ্গনার এরূপ আগুনে একপ্রকার ঘৃতাহুতি দিয়েছে সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যু। আর তারপর থেকেই আরও প্রতিবাদী মুখর হয়ে উঠেছেন বলি ক্যুইন কঙ্গনা রানাউত। রোজই কোনো না কোনো বিষয়ে সরব হয়েছেন এবং উঠে এসেছেন খবরের শিরোনামে।
এবার তাঁর নিশানা ছিল আধুনিক নেটিজেনদের পুজো অর্চনা নিয়ে মস্করা। তাই ফেসবুকে লম্বা পোস্টে তিনি লিখলেন, ‘আমার বেশ মনে আছে ঠাকুমা, মা এবং কাকিমা-সহ আশেপাশের অন্য মহিলারা করবা চৌথে উপোস করতেন। হাতে মেহেন্দি লাগাতেন, নেল-পলিশ পরতেন, বধূবেশে সেজে নাচগান করতেন। তাঁদের দেখে বাড়ির পুরুষেরা হাসাহাসি করতেন। স্বামীকে ভগবান মেনে পুজো, নানা রকমের হাসিঠাট্টা হত পরিবারে। করবা চৌথের দিন রান্নাঘরে প্রবেশ করতেন না মহিলারা।
তাই অন্যদেরও উপোস করে থাকতে হত। পারিবারিক বিভেদ এই দিনে মুছে যেত। কিন্তু পরিবারের মধ্যে সম্পর্কের টান হত গভীর। আমার দিনগুলোর কথা বেশ মনে আছে। যারা উপোস করতেন তাদের সবাইকে করবা চৌথের শুভেচ্ছা জানানো হত। যাঁরা বিশ্বাস করেন না অনুগ্রহ করছি, অন্তত ঠাট্টা করবেন না। যেই মা বোনেরা করওয়া চৌথের মতো কঠিন ব্রত পালন করেন তাদের নিয়ে মোটেও হাসি ঠাট্টা করা উচিৎ নয়।’