সব খবর সরাসরি পড়তে আমাদের WhatsApp  Telegram  Facebook Group যুক্ত হতে ক্লিক করুন

বেশি সুন্দরী হওয়ার কারণে কেরিয়ার গ’ড়ে তু’ল’তে পারেননি, ষ’ড়’য’ন্ত্রে’র শি’কা’র হয়েছিলেন দিয়া মির্জা

২০০১ সাল বলিউডে পা রাখেন এক অপরুপা সুন্দরী দিয়া মির্জা। নামী মডেল থেকে তখন তার আরেক পরিচয় তিনি ‘মিস এশিয়া প্যাসিফিক’। কাজেই বলিউডের রাস্তাটা তখন তার জন্য ছিল অনেকটাই চওড়া। বলিউডে তার ডেবিউ হলো ‘রেহেনা হে তেরে দিল মে’ ছবি দিয়ে। আর মাধবনের সঙ্গে বলিউডের নবাগতা সুন্দরীর অম্লমধুর কেমিস্ট্রি তখন দর্শকের মুখে মুখে ফিরছে। এই সুন্দরীর জন্ম জন্ম হয় ১৯৮১ সালে হায়দ্রাবাদের দম্পতি ফ্র্যাঙ্ক হেন্ড্রিক আর দীপার ঘরে।

বাবা ছিলেন জার্মান এবং মা বাঙালি। তবে মাত্র সাড়ে চার বছর বয়সেই বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ হয়। আহমেদ মির্জাকে দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন দীপা। দিয়ার নামের পাশে থেকে এভাবেই বাবার পদবী সরে গিয়ে জুড়ে যায় মির্জা পদবী।

ছোট থেকেই তিনি স্বাধীনচেতা। তাই কলেজে পড়ার সময় থেকেই একাধারে মার্কেটিং এক্সিকিউটিভ পদে ৫ হাজার টাকা বেতনের চাকরি আর তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মডেলিং চালিয়ে যেতেন দিয়া। অভিনয়ের সুযোগও খুঁজছিলেন হন্যে হয়ে।

যদিও তার মা অবশ্য এসব পছন্দ করতেন না। তবে বাবা আহমেদ মির্জার সমর্থন পেয়ে তিনি তার লক্ষ্যে এগিয়ে গিয়েছেন। যে বছর মিস ওয়ার্ল্ড হলেন প্রিয়াঙ্কা চোপড়া, মিস ইউনিভার্স হলেন লারা দত্ত, সেই ২০০০ সালেই দিয়ার মাথায় উঠলো ‘মিস এশিয়া প্যাসিফিক’ এর মুকুট। এরপর আর তাকে বলিউডের দরজায় ঘুরতে হয়নি। ছবি প্রস্তাব নিয়ে বলিউড নিজে এসেছে তার দরজায়। প্রথম ছবি আর মাধবনের বিপরীতে।

সারা ভারত তখনই চিনে নিয়েছিল নবাগতা সুন্দরীকে। এরপর ‘দিওয়ানাপান’, ‘তুমকো না ভুল পায়েঙ্গে’, ‘দম’ – ২০১৪ সাল পর্যন্ত ৪২টি ছবিতে অভিনয় করে গিয়েছেন তিনি। কিন্তু সফল নায়িকা হওয়া হয়ে উঠলো না তার। তার সমকালীন সময়ে বলিউডের তিন খান আমির, শাহরুখ এবং সালমানদের সঙ্গে ছবি করার সুযোগও তিনি পাননি।

বলিউডে সেভাবে জায়গা করতে না পারার কারণ হিসেবে তিনি বলেছেন, সে সময়ে বলিউডে শ্যাম বর্ণ হলে কাজ মিলতো না, আর দিয়া যেহেতু সেই সময়ে অতিরিক্ত ফর্সা ছিলেন না তাই তিনি অস্বস্তিতে ভুগতেন। তার দাবি, “আমার রূপ অনেক সময়ই আমার পেশায় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। একটি চাকরি হারিয়েছি এবং একটি চরিত্রে আমাকে বাছাই করা হয়নি। কারণ আমি দেখতে সুন্দর। এটা একটা অদ্ভুত ধরনের অসুবিধা।”

দিয়ার দীর্ঘ কেরিয়ার জীবনে কেবলমাত্র ওই একটি ছবিতেই তাকে মনে রেখেছে বলিউড। দিয়ার অভিনয় দর্শকের নজর কাড়তে পারেনি।তাই তার সফল ছবির তালিকা খুবই কম। ২০১৪ সালে প্রাক্তন স্বামী সাহিল সঙ্ঘের সঙ্গে তিনি নিজের প্রযোজনা সংস্থা ‘বর্ন ফ্রি এন্টারটেইনমেন্ট’ খুলে ফেলেন। দিয়ার প্রথম স্বামী সাহিল ছিলেন উদ্যোগপতি। ২০১৪ তে তারা বিয়ে করে। দীর্ঘ পাঁচ বছর পর ২০১৯ সালে ভেঙে যায় সেই সম্পর্ক। স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর খুলে ফেলেন নতুন প্রযোজনা সংস্থা ‘ওয়ান ইন্ডিয়া স্টোরিজ’।

২০২১এ বৈভব রেখিকে বিয়ে করেন দিয়া। সদ্য মা হয়েছেন তিনি। একরত্তি ছেলের নাম রেখেছেন অভ্যান আজাদ। এই আজাদ কথাটি লেখা রয়েছে অভিনেত্রীর হাতের উল্কিতেও। বরাবর ধর্মীয়, সামাজিক এবং অন্যান্য যেকোনও ধরনের গোঁড়ামির বিরুদ্ধে ‘আজাদ’ মনোভাব রেখেছেন তিনি। এমনকি তার পরিচয় পত্রে ধর্মের জায়গাটিও রয়েছে ফাঁকা। কারণ তিনি কোনও বিশেষ ধর্মে বিশ্বাস করেন না। পশুদের অধিকার, কৃষকের স্বার্থ থেকে শুরু করে মাদার টেরিজাকে নিয়ে শাসকদলের মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করে বিজেপির কোপে পড়েছেন অভিনেত্রী।

দোল উৎসবে জলের অপব্যবহার নিয়ে মুখ খোলায় তার বিরুদ্ধে বিশেষ ধর্মের প্রতি বিরাগ দেখানোর অভিযোগ তোলা হয়েছিল। নারীবিদ্বেষের বিরুদ্ধেও মুখ খুলেছিলেন একসময়। কোনও কিছুর তোয়াক্কা না করেই বলেছিলেন, “এক সময়ে বলিউডে নারীবিদ্বেষী ছবি তৈরি হত, গল্প লেখা হত। ‘রেহনা হ্যায় তেরে দিল মে’ও সে রকমই একটি ছবি। আর আমি সেই ছবিতে ছিলাম!”