বর্তমান সভ্য যুগে পশুপাখি শিকার অন্যতম অপরাধ হিসেবে ধরা হয়। তবে পৃথিবীতে এখনও বহু জনজাতি বা উপজাতি রয়েছে যাদের কাছে শিকার এবং শিকারীর কদর রয়েছে। এরকমই একটি উপজাতি হলো নাগাল্যান্ডের নাগা উপজাতিরা। এঁরা পৃথিবীর ইতিহাসে অত্যন্ত ভয়ঙ্কর উপজাতি হিসেবে হিসেবে চিহ্নিত রয়েছেন। এরা এতটাই ভয়ঙ্কর যে পশুপাখি শিকারের পাশাপাশি নরমুণ্ড শিকারেও এদের অনীহা নেই।
পৃথিবীতে দুর্ধর্ষ সাহসী যোদ্ধা হিসেবেই পরিচিত নাগা উপজাতিরা। একসময় পশুপাখি শিকার তাদের কাছে ছিল একেবারেই জলভাত। আবার মানুষ মেরে তার মুন্ডু কেটে ঘরে টাঙিয়ে রেখে ঘরের শোভা বর্ধন করতেও দেখা গিয়েছে বহু নাগা যোদ্ধাকে। নর মুন্ডু কাটা নাগা যোদ্ধাদের কপালে উল্কি এঁকে তাদের আলাদা করে চিহ্নিত করা হতো। তাদের সামাজিক কদর ছিল বেশ।
তবে ১৯৪০ এর দশকে অবশ্য নাগা উপজাতিদের এই ভয়ঙ্কর রীতিনীতি আইন করে বন্ধ করে দেওয়া হয়। তার পরেও অবশ্য নাগাল্যান্ডে ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত মুন্ডু শিকারের হদিস মিলেছে। এরপর প্রশাসনের নজরদারি শুরু হতেই ঘরের শোভাবর্ধনকারী ওই মুন্ডুগুলিকে মাটিতে পুঁতে দেওয়া হয়েছিল। তার আগে কোনো মহিলার মন জিতে নিতে কিংবা শত্রুর মুন্ডু কেটে বাড়িতে ঝুলিয়ে রাখাই ছিল নাগা উপজাতিদের বীরত্বের প্রতীক।
মহিষ, হরিণ, বনগাই, বন্য শূকর আর ধনেশের মাথার খুলি বাড়ির দেওয়ালে টাঙিয়ে রাখাই নাগা উপজাতিদের রীতি ছিল। বীরত্বের নিদর্শন হিসেবে ধরা হতো এগুলিকে। পশুপাখির মাথার খুলির পাশাপাশি মানুষের মাথার খুলিও বাড়ির দেওয়ালের শোভাবর্ধনকারী এবং বীরত্বের নিদর্শন হিসেবেই ধরতেন নাগা যোদ্ধারা। প্রশাসনের হস্তক্ষেপে সে ভয়ঙ্কর প্রথা বিলোপ হয়েছে।