পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুরে ইতিহাস প্রসিদ্ধ চরিত্র ভবানী পাঠকের পুরানো আরাধ্যা কালিকা দেবীর মন্দিরের অবস্থান। যে মন্দিরে মা কালী ভারতমাতা রূপে পূজিত হন। এই মন্দিরের সাধনার মূলমন্ত্র একটাই, বন্দেমাতোরম জয় জয় ভারত বর্ষ। যা আজ সারা দেশের কোনও মন্দিরের সঙ্গে মিলবে না। শত শত বছর ধরে ভারত মাতার আরাধনা করে আসছে এই মন্দির। ব্রিটিশ শাসিত ভারতবর্ষে হয়েছিল মন্দিরের উত্থান। সেই থেকে আজ পর্যন্ত সাধনার মূল মন্ত্র পরিবর্তিত হয়নি।
দুর্গাপুরের প্রধান প্রাণকেন্দ্র সিটি সেন্টারের অম্বুজা কলোনিতে অবস্থিত এই মন্দির। আজও দিনে-দুপুরে মন্দিরে প্রবেশ করলে গা ছমছম করে ওঠে। আজ শহরের সব থেকে অভিজাত এলাকায় এই মন্দিরটি অবস্থিত। তবুও যেন তার গাম্ভীর্য এতোটুকু ক্ষুন্ন হয়নি। স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় পুরনো মন্দিরে দেবী মূর্তি পিছনে অখন্ড ভারতের একটি মানচিত্র রাখা ছিল। এখন আর অবশ্য তার দেখা মেলে না।
চারিদিকে সবুজ ঘেরা শান্ত পরিবেশ বিরাজ করে এই মন্দিরে। “বন্দে মাতরম্, জয় জয় ভারতবর্ষম। ঐক্যং শরনম্ গচ্ছামি। সত্যম্ শরনম্ গচ্ছামি। স্বরাজম্ শরনম্ গচ্ছামি”, এই মহামন্ত্র জাপে মন্দির খোলা এবং বন্ধ করা হয় আজও। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের দিনগুলির সঙ্গে এই মন্দিরের ইতিহাস জড়িত। বিপ্লবীদের আস্তানা ছিল এই মন্দির। ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের পরিকল্পনা চলতো মন্দির প্রাঙ্গণে।
বিপ্লবীরা আজ থেকে শত শত বছর পূর্বে যেভাবে মা কালীর মধ্যে দেশমাতৃকার আরাধনা করতেন, আজও সেই রীতি চলে আসছে। মন্দিরের সংস্কার হয়েছে ঠিকই, তবে পূজার্চনা করার রীতিনীতির কোনও পরিবর্তন হয়নি। সারা দেশের মধ্যে একমাত্র এই মন্দিরেই আজও পূজিতা দেশমাতৃকা। অনেকে আবার এই মন্দিরকে ডাকাতে কালীমন্দিরও বলেন।