আজ 5 ফেব্রুয়ারি, বসন্ত পঞ্চমী। বসন্ত পঞ্চমী তিথিতে এসে শীতকালের শেষ এবং বসন্ত ঋতুর সূচনা হতে চলেছে। এইসময় প্রকৃতিতেও অদ্ভুত সুন্দর পরিবর্তন দেখা যায়। প্রকৃতি যেন যা কিছু পুরনো, সবকে ত্যাগ করে নতুন রূপে সেজে ওঠে। হিন্দু শাস্ত্রমতে মনে করা হয় দেবী সরস্বতী এই দিনে আবির্ভূত হয়েছিলেন। বসন্ত পঞ্চমী তিথিতে তাই দেবী সরস্বতীর আরাধনা করা হয়ে থাকে।
আরো পড়ুন: বীভৎস বৃষ্টি, মেঘ ভে’ঙে নেমে এ’লো প্রচন্ড গ’তি’তে জল, ভাইরাল ভিডিও
এই দিনটিতে বাসন্তী রঙের পোশাক বা হলুদ রঙের পোশাক পরার চল রয়েছে উত্তর ভারতে। হিন্দু শাস্ত্র মতে দেবী স্বরস্বতীর জন্মের আগে পৃথিবী নীরব ছিল। বসন্ত পঞ্চমীর দিন দেবী সরস্বতী যখন আবির্ভূত হন তখন তার বীনা ছিঁড়ে যায় এবং তার কন্ঠস্বর পৃথিবীর প্রত্যেক প্রাণীর কাছে চলে আসে। এর ফলে বেদ মন্ত্র প্রতিধ্বনিত হতে থাকে চারিদিকে।
ভগবান শ্রীকৃষ্ণ দেবীকে এই বর দেন যে এই দিনটি তাকেই উৎসর্গ করা হবে। সেই থেকে আজ পর্যন্ত মর্ত্যের মানুষেরা দেবীকে পূজা করছেন জ্ঞান, বাণী এবং সঙ্গীতের দেবী হিসেবে। বসন্ত পঞ্চমীর দিন প্রত্যেক বাড়ির ছোট ছোট শিশুদের হাতে ঘড়ি হয়। সকলে বিশ্বাস করেন এতে শিশুরা তীক্ষ্ণ বুদ্ধি সম্পন্ন হবে এবং তাদের উপরে মা সরস্বতীর কৃপা থাকবে সবসময়।
বসন্ত পঞ্চমীর দিন ভারতের বিভিন্ন জায়গাতে ঘুড়ি ওড়ানোর আয়োজন করা হয়। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন মিষ্টি তৈরি করা হয় দিনটিকে উৎসর্গ করে। উত্তরপ্রদেশে দেবীকে প্রসাদ হিসেবে হলুদ মিষ্টি চাল প্রদান করা হয়।
আরো পড়ুন: আ’রো একটি ব্যাংক দেউলিয়া, লাইসেন্স বা’তি’ল RBI-র, কত টা’কা গ্রাহকরা পাবেন জেনে নিন
বাংলাতে দেবীর প্রসাদ হিসেবে বুন্দিয়ার লাড্ডু এবং মিষ্টি ভাত দেওয়া হয়। বিহারে দেবীকে ক্ষীর, মালপোয়া, বুন্দিয়া এবং পাঞ্জাবে ভুট্টার রুটি, সরষে শাক এবং মিষ্টি ভাত দেওয়ার প্রচলন আছে। বসন্ত পঞ্চমী দিনেই হোলিকা দহনের জন্য কাঠ সংগ্রহ করে রাখা হয়। এর ঠিক চল্লিশ দিন পর হোলির একদিন আগে হোলিকা দহন করে হোলি খেলা হয়।
কথিত আছে এই দিনে শ্রী রাম সীতার সন্ধানে গুজরাট এবং মধ্যপ্রদেশের মাঝে থাকা দণ্ডকারণ্য এলাকায় মা শবরীর আশ্রমে এসেছিলেন। এখানে বনের মধ্যে একটি শিলার পূজা করা হয় আজও। মনে করা হয় এই শিলার উপরে শ্রীরাম বসেছিলেন। সেখানে রয়েছে মাতা শবরীর মন্দির।