একজন ছেলে অথবা মেয়ের কাছে সবথেকে বেশি আপন হলেন তার বাবা অথবা মা।তবে মাঝে মাঝে এমন কিছু নিষ্ঠুরতার কথা আমরা জানতে পারি, সেগুলি শুনলে অচিরেই আমাদের গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে। সম্প্রতি এমনই একটি নৃশংস ঘটনা ঘটেছে কলকাতার চাঁদপাল ঘাঁটে। সোমবার সকালবেলা সেই এলাকার কিছু মানুষ প্রাতঃভ্রমণে আসতে সেখানে পোড়া মাংসের টুকরো দেখতে পান। এদিক-ওদিক ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল সেই মাংসপিণ্ড গুলি।
প্রথমে দেখে আসল ঘটনাটি কেউ আন্দাজ করতে পারেনি। তবে আন্দাজ না করতে পারাটাই ছিল স্বাভাবিক। এলাকার মানুষজন মাংসের টুকরোগুলো দেখে খবর দিয়েছিলেন নর্থপোল থানার পুলিশকে। সঙ্গে সঙ্গে সেখানে উপস্থিত হন পুলিশের ফোর্স। তদন্তে নেমে যে ঘটনাটি সকলের সামনে উঠে আসে, তা এককথায় সকলকে স্তব্ধ করে দেয়।
তদন্তে নেমে ওই এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে তদন্তকারীরা। পুলিশ জানতে পারে ওই মৃত ব্যক্তি এবং তার মেয়ের সম্পর্কে। মৃত ব্যক্তির নাম ছিল বিশ্বজিৎ আদ্য। তার বাড়ি ক্রিস্টোফার রোডে। তদন্তে নেমে মৃত ব্যক্তির মেয়েকে বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।টানা কয়েক ঘণ্টা জেরা করার পর পিয়ালী কে, পুলিশ জানতে পারে যে গত শনিবার রাতে বাবাকে রেস্তোরাঁতে ডিনার করার নাম করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেছিল পিয়ালী। ডিনারের পর তারা পার্কে বসে কিছুক্ষণ গল্প করেন।বিশ্বজিৎবাবু পার্কে বসে কিছুক্ষণ মদ্যপান করেছিলেন। অতিরিক্ত মদ্যপান করার পর তিনি সেখানেই ঘুমিয়ে পড়েন। তখন তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় তার নিজের মেয়ে।
কিন্তু কি এমন হয়েছিল যার জন্য এই নিশংস হত্যা করতে হলো পিয়ালী কে? পুলিশের জেরায় পিয়ালী জানান যে, বাবা নিয়মিত মদ্যপান করতেন।তার ওপর শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন করতেন নিয়মিত। এক সময় থাকতে না পেরে নিশংস ঘটনাটি ঘটানোর জন্য বাধ্য হয়েছিলেন তিনি।জেরা করাতে পুলিশ আরও জানতে পেরেছে যে, পিয়ালির বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছিল কিছুদিন আগে। সংসারে ভীষণভাবে আর্থিক অনটন চলছিল। কিন্তু আর্থিক অনটনের জন্য নাকি অন্য কোন কারণে পিয়ালী এই খুন করল তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।