দীর্ঘ ছয় বছর ধরে মহাকাশে থাকার পরেও সেই ইঁদুরে শুক্রাণু ব্যবহার করেই বৈজ্ঞানিকরা গবেষণাগারে ছোট ছোট ইঁদুর ছানার জন্ম দিতে সমর্থ হলেন। মহাকাশে অবস্থিত স্পেস সেন্টারের এতদিন ধরে ইঁদুরের শুক্রাণু সংরক্ষণ করে রাখা ছিল। একটি সমীক্ষার অন্তর্গত ছিল এই ব্যবস্থা। দীর্ঘদিন পর মহাকাশ থেকে সেই শুক্রাণু গুলিকে ফিরিয়ে এনে ডিম্বাণু সঙ্গে নিষেক ঘটিয়ে গবেষণাগারে জন্ম নিল শতাধিক ইঁদুর ছানা।
আন্তর্জাতিক স্পেস সেন্টারে এতদিন হিমায়িত করে সংরক্ষণ করে রাখা ছিল ইঁদুরের শুক্রাণু। মহাকাশের মহাজাগতিক রশ্মি শুক্রাণু বিশেষত প্রাণী কোষের ডিএনএ এর উপর কোনো প্রভাব ফেলে কিনা, মিউটেশন ঘটে কিনা এবং তার থেকে নতুন প্রজাতির ইঁদুর জন্ম নেয় কিনা তা জানার জন্যই কার্যত এই সমীক্ষা চালিয়েছিলেন গবেষকরা। তবে সমীক্ষার ফলাফলে দেখা গেল মহাকাশের মহাজাগতিক রশ্মি তেমনভাবে ডিএনএর উপর কোনো প্রভাব ফেলেনি।
২০১৩ সালে ৪৮টি অ্যাম্পিউল ভর্তি করে শুক্রাণু পাঠিয়েছিলেন আন্তর্জাতিক স্পেস সেন্টারে। এই শুক্রাণু গুলিকে প্রথমে নয়মাস, তারপরে দু’বছর, তার পরে ছয় বছর পর পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনা হয়। এরপর সেগুলিকে হাইড্রেট করে সেখান থেকে শতাধিক ইঁদুরছানার জন্ম দেওয়া হয়। এই পদ্ধতিতে প্রায় ১৬৮টি ইঁদুর ছানার জন্ম হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
সদ্য জন্ম নেওয়া এই ইঁদুরছানাগুলি স্বাভাবিক নিয়মেই বড় হবে এবং বড় হয়ে তারা স্বাভাবিক উপায়েই সঙ্গম করবে এবং নতুন প্রজন্মের জন্ম দেবে বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। বৈজ্ঞানিকদের মতে, ভবিষ্যতে যখন অন্য গ্রহে মানুষের স্থানান্তরের সময় আসবে তখন এই জীব বৈচিত্র্য এভাবেই সংরক্ষণ করে নিয়ে যেতে হবে মানুষকে। মানুষের পাশাপাশি অন্য সকল প্রাণীর ক্ষেত্রেই এইভাবে জীব বৈচিত্র্য স্থানান্তর করা সম্ভব।